Mental Health : দু-একদিনের দৌড়ঝাঁপ, ঘুমের ঘাটতি, অফিস বা সংসারের চাপে একটু ক্লান্তি—সবাই সহ্য করতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে যদি শরীর নিজের সীমা অতিক্রম করে, তাহলে সে আর চুপ থাকে না। নিজের মতো করে সঙ্কেত পাঠাতে শুরু করে। কখনও সেটা মাথাব্যথা, কখনও কাজে মন না বসা, আবার কখনও একটানা অস্থিরতা। এই সঙ্কেতগুলো অবহেলা করলে ফল হতে পারে মারাত্মক। তাই শরীর যখন বলে, “আমি আর পারছি না”—তখন তার ডাকে সাড়া দেওয়া উচিত।চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই পাঁচটি লক্ষণ, যা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়—আপনার শরীর এখনই বিশ্রাম চাইছে।
১. কাজে মন না বসা, মনোযোগের ঘাটতি
আপনার কি ইদানীং কাজে একটুও মন বসে না? সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগছে? বা খুব সহজ একটা কাজেও ভুল হয়ে যাচ্ছে? এটাই ‘ব্রেন ফগ’—যেখানে চিন্তার গতি ধীর হয়ে যায়, মন অস্থির থাকে, এমনকি স্মৃতিশক্তিও কমে যেতে পারে। এই অবস্থা মানসিক ক্লান্তির ফল, আর তার একমাত্র সমাধান—সম্পূর্ণ বিশ্রাম।
২. মাথাব্যথা ও বমি ভাব
দিনের পর দিন যদি ঘাড়ের পেছন থেকে মাথা ভার হয়ে থাকে, চোখে ঝাপসা লাগে, মাথা ঘোরে—তাহলে সাবধান হোন। শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়লে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। ঘুমিয়েও যদি মাথাব্যথা না কমে, বুঝবেন আপনার শরীর সম্পূর্ণ রিকভার করতে পারছে না।
৩. মেজাজ বিগড়ানো, আবেগে ওঠানামা
সারাক্ষণ রাগ, হতাশা বা কান্না পাওয়ার অনুভূতি থাকলে সেটাও বিশ্রামের দরকারের লক্ষণ। স্ট্রেস লেভেল বেড়ে গেলে মন অকারণে অস্থির হয়ে পড়ে। ছোটখাটো বিষয়েও রেগে যাচ্ছেন বা প্রিয়জনের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয়ে ঝগড়া হচ্ছে? এর পেছনে দায়ী হতে পারে ক্লান্ত শরীর ও মানসিক চাপ।
৪. অনিদ্রা ও ঘুমের ব্যাঘাত
ঘুমোতে গেলে কি মাথায় নানা চিন্তা আসে? অথবা বারবার ঘুম ভেঙে যায়? দিনে কাজের মধ্যে আচমকা ঘুমিয়ে পড়ছেন? ক্লান্ত শরীর বিশ্রাম পেতে চায়, কিন্তু অতিরিক্ত চাপ ও স্ট্রেসে ঘুমের ধরনই পাল্টে যায়। সেক্ষেত্রে বিশ্রাম ছাড়া আর কোনও পথ নেই।
৫. খাওয়াদাওয়ায় অনীহা
আপনার প্রিয় খাবারও কি ইদানীং আর ভাল লাগছে না? খেতে ইচ্ছা করছে না, পেট ভর্তি লাগছে, কিংবা খাওয়ার পরেই বমি ভাব হচ্ছে? এটি ক্লান্তি ও পেটের চাপের সরাসরি লক্ষণ। যখন শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না, তখন হজমপ্রক্রিয়াও গতি হারায়।
কী করবেন এই লক্ষণ দেখলে?
দৈনিক অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন
কাজের মাঝে ছোট ছোট বিরতি নিন
সপ্তাহে অন্তত একদিন সম্পূর্ণ বিশ্রামের দিন রাখুন
নিয়মিত জল খান, বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন
প্রয়োজন হলে মনোবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
আপনার শরীর আপনাকেই আগাম বার্তা দেয়। দরকার শুধু, সেই বার্তাগুলো ঠিকমতো শোনার। না হলে একসময় শরীরই থেমে যাবে, আর আপনি কিছু করার আগেই দেরি হয়ে যাবে। তাই আজই ভাবুন—আপনার শরীর কি বিশ্রাম চাইছে? যদি হ্যাঁ হয়, তবে তাকে থামার সময় দিন। কারণ ক্লান্ত শরীরই হারে, বিশ্রামই তাকে ফের জিতিয়ে দিতে পারে।