পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে ঘটে গেল এক লজ্জাজনক এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা। এক বিশেষভাবে সক্ষম ৩৬ বছরের তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এলাকারই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনার জট খুলেছে মাত্র কয়েক দিন আগে, যখন তাঁর শারীরিক পরিবর্তন চোখে পড়ে পরিবারের।
ছয় মাস আগে শুরু হয়েছিল নির্যাতনের চক্র
জানা গেছে, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বসবাসকারী ওই মহিলা তাঁর দাদা ও বৌদির সঙ্গে থাকতেন। প্রাথমিকভাবে এক ব্যক্তি তাঁর অক্ষমতার সুযোগ নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে, সেই ব্যক্তির দুই সঙ্গীও তাঁকে একাধিকবার যৌন নির্যাতন করে বলে অভিযোগ।
জরুরি চিকিৎসা পরীক্ষায় মিলল গর্ভধারণের প্রমাণ
যদিও নির্যাতনের ঘটনাটি ওই তরুণীর পক্ষ থেকে তখন বোঝা সম্ভব ছিল না, কিন্তু সাম্প্রতিক কালে তাঁর শারীরিক গঠনে বদল লক্ষ্য করেন বৌদি। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানা যায় ভয়ঙ্কর সেই ঘটনার বিস্তারিত। মেডিক্যাল পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়, ওই তরুণী প্রায় ছয় মাসের গর্ভবতী।
অভিযোগের ভিত্তিতে তিন অভিযুক্ত গ্রেফতার
ঘটনার খবর জানার পর দ্রুত শালবনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পরিবার। বুধবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তিনজন—সোমনাথ সরেন, রঞ্জন মাহাত ও বিদ্যাচরণ মাহাত—কে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে পেশ করা হয় ধৃতদের। বিচারক তাঁদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন।
তদন্ত জারি, গোপনে বয়ান রেকর্ড বৌদির
তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার বৌদির গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। পাশাপাশি, তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ভবিষ্যৎ চিকিৎসা প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে প্রশাসনিক আলোচনা। পুলিশের দাবি, আরও তথ্য পাওয়ার জন্য স্থানীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সমাজে নিরাপত্তা কোথায়?
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রতিবন্ধীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সমাজকর্মীরা। তাঁরা মনে করছেন, বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের সুরক্ষার জন্য আরও কঠোর আইন ও নজরদারি জরুরি।
এই ঘটনার তদন্ত এখন প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে যা ঘটেছে, তা নিঃসন্দেহে সমাজের এক অন্ধকার দিককে সামনে নিয়ে এসেছে। আইনত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া এমন অপরাধের রাশ টানা সম্ভব নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।