Operation Sindoor : অপারেশন সিঁদুর—এই নামেই গত ক’দিন ধরে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে রাজ্যে। এবার সেই বিতর্কে ঘৃতাহুতি দিলেন পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নারেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর মন্তব্য, ‘বিজেপি আসলে নাটক করছে, সিঁদুর খেলা নয়, ওরা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছে, পাকিস্তানের সঙ্গে ফিটিং।’ এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি শিবিরে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
বিজেপির পাল্টা প্রতিক্রিয়া
বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা জিশান কুরেশি সরাসরি কুলটি থানায় ই-মেল মারফত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিধায়কের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ—এই ধরনের মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক শালীনতাকেই ভঙ্গ করে না, একইসঙ্গে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানোরও আশঙ্কা তৈরি করে।
বিজেপি নেতা বলেন, “তৃণমূল বিধায়ক একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়েও পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে এনে সাধারণ মানুষকে প্ররোচিত করছেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
কী বলেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক?
পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নারেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সম্প্রতি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন—“বিজেপি এখন সিঁদুর নিয়ে নাটক শুরু করেছে। এটা গোটাটাই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। পাকিস্তানের সঙ্গে ওদের মেন্টাল ফিটিং আছে বলে মনে হয়!”
এই বক্তব্য ঘিরেই তৈরি হয় প্রবল বিতর্ক। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই ধরনের মন্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা।
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল সূত্রে এখনো পর্যন্ত দলের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে স্থানীয় স্তরের কিছু নেতার বক্তব্য—বিধায়ক তাঁর ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন, এবং এর দায় দল নেবে না। এক তৃণমূল কর্মী বলেন,“এটা নারেনদার নিজস্ব ভাষা। ও অনেক সময় একটু বেশি খোলামেলা কথা বলেন, কিন্তু এর মানে এই নয় যে দলের বক্তব্য সেটাই।”
জনগণের প্রতিক্রিয়া
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কেউ বলছেন, রাজনীতির নামে সীমা লঙ্ঘন করছেন বিধায়ক, আবার কেউ মন্তব্য করছেন—বিজেপির অপারেশন সিঁদুর কর্মসূচি-ই বিভাজনের রাজনীতি।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
‘অপারেশন সিঁদুর’ মূলত বিজেপির একটি মহিলা-কেন্দ্রিক জনসংযোগ অভিযান। রাজ্যব্যাপী এই অভিযানে মহিলা ভোটারদের মন জয়ে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। এই অভিযানের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই তৃণমূলের বহু নেতা নেত্রী কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন, কিন্তু নারেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মন্তব্য রাজনীতির ভাষা ছাড়িয়ে যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তুলনায় পৌঁছে গেছে, যা বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
উল্লেখ্য, একদিকে যখন রাজ্যে রাজনৈতিক তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে, তখন এমন উস্কানিমূলক মন্তব্য রাজনীতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে। বিধায়কের মন্তব্য শুধুই দলীয় কৌশল, নাকি পরিকল্পিত বিভ্রান্তি সৃষ্টি—তা সময়ই বলবে। তবে এ কথা নিশ্চিত, ‘সিঁদুর’ এখন আর শুধু সংস্কার নয়, হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক আগুনের রঙ!