পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বার্তা পৌঁছে দিতে কেন্দ্র সরকার যে বহুদলীয় প্রতিনিধি দল গঠন করছে, তাতে তৃণমূলের অবস্থান পরিস্কার। বিদেশনীতি নিয়ে বিজেপিকে সমর্থন করলেও দলের সাংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্য কারও ‘নাক গলানো’ বরদাস্ত করবে না বলেই জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইউসুফ পাঠানের নাম প্রত্যাহার
এই প্রতিনিধিদলের তালিকায় ছিল তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ পাঠানের নাম। কিন্তু তৃণমূল সরাসরি সেই নাম প্রত্যাহার করিয়ে নেয়। মমতার বক্তব্য, “আমাদের দলের হয়ে কে প্রতিনিধিদলে যাবে, সেটা আমাদের সিদ্ধান্ত। অন্য কারও পছন্দে চলবে না।”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ মদত নিয়ে তথ্য তুলে ধরার প্রক্রিয়া ঠিক আছে, কিন্তু কে যাবে সেটা বিজেপি ঠিক করবে না।”
কংগ্রেসের দ্বিধা, উঠছে প্রশ্ন
অন্যদিকে, কংগ্রেস যদিও বিষয়টিতে রাজনৈতিকভাবে বিজেপিকে বিঁধেছে, তবুও সাংগঠনিক স্তরে তেমন অবস্থান নিতে পারেনি। কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরকে সরিয়ে নিতে পারেনি দল। কেন্দ্রীয় সরকারের তালিকায় তারুর রয়েই গেছেন। বরং সাম্প্রতিক সময়ে তারুরের মোদী-প্রশংসা নিয়েও দলে উঠেছে বিতর্ক।
জয়রাম রমেশ কটাক্ষ করে বলেছেন, “কংগ্রেসে থাকা আর কংগ্রেসের হয়ে থাকা—এই দুই এক নয়।” কিন্তু তাতে অবস্থার বদল হয়নি। প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা—উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনাও তাঁকে প্রত্যাহার করতে পারেনি।
তৃণমূলের কড়া বার্তা: ‘তারুর’ নয় কেউ
তৃণমূলের রাজনৈতিক অবস্থান এখানেই আলাদা। সাংসদ ইউসুফ পাঠানকে সরিয়ে দিয়ে দল বার্তা দিয়েছে, দলীয় অনুমোদন ছাড়া কেউ ‘তারুর’ হতে পারবে না। দলের ভিতরে থেকেও অন্যরকম অবস্থান নেওয়ার সুযোগ নেই। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর পক্ষ থেকে ব্যক্তিগতভাবে ইউসুফের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাসপোর্ট চাওয়ার পরও তৃণমূল কড়া অবস্থান নেয়।
এই ঘটনাপ্রবাহে তৃণমূল দলের দৃঢ়তা যেমন স্পষ্ট, তেমনই স্পষ্ট কংগ্রেসের দ্বিধা ও ভিতরের মতবিরোধ। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বিষয়েও ‘নজির’ তৈরি করে ফেলল তৃণমূল।