Offbeat Destinations : শহরের ধোঁয়া আর কোলাহল থেকে পালাতে কে না চায়? একটুখানি সবুজ, একটু ঠান্ডা জল আর প্রকৃতির নিঃশব্দ ডাকে সাড়া দিলে যে শান্তি পাওয়া যায়, তা আর কিছুতেই সম্ভব নয়। বিশেষ করে বর্ষার সময়, যখন পাহাড়ে গড়িয়ে পড়ে ঝর্ণার জল, তখন এমন অনেক জায়গা আছে ভারতে, যেখানে প্রকৃতিই তৈরি করে দিয়েছে ‘ন্যাচারাল সুইমিং পুল’।
কেম্পটি ফলস, উত্তরাখণ্ড: মুসৌরির গোপন রত্ন
মুসৌরি ঘুরতে গেলে কেম্পটি ফলস অনেকেই দেখেন। তবে খুব কম লোকই জানেন, এই ঝর্ণার পাদদেশে তৈরি হয়েছে একটি প্রাকৃতিক পুল, যা গ্রীষ্ম ও বর্ষা—উভয় ঋতুতেই থাকে ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয়। সাড়ে চার হাজার ফুট উঁচু পাহাড় থেকে নেমে আসা জলের ধারা এখানে নীল-সবুজ জলরাশিতে পরিণত হয়, যেখানে স্নান করাটা যেন এক অভূতপূর্ব অনুভূতি।
দুধসাগর জলপ্রপাত, গোয়া: দুধে ভেজা স্বপ্নের জলরাশি
গোয়া এবং কর্নাটকের সীমান্তে অবস্থিত দুধসাগর জলপ্রপাত এক প্রকৃত সৌন্দর্যের প্রতীক। বর্ষাকালে এর জল দুধের মতো ঝরে পড়ে নিচে। যদিও এখানে স্নান করার আলাদা জায়গা নেই, তবে আপনি ভিজে না গিয়ে ফিরতে পারবেন না। বিশেষ ট্রেনও চলে এই জলপ্রপাত দেখার জন্য। ভেলগামি থেকে ভাস্কো ডা গামা রুটে ট্রেনে চেপে পৌঁছতেই পারেন।
ক্র্যাং সুরি জলপ্রপাত, মেঘালয়: সবুজ পাহাড়ে নীল জলরাশি
মেঘালয়ের বর্ষা মানেই যেন অন্য এক জগত। কালো মেঘ আর সবুজে মোড়া পাহাড়ের মাঝে রয়েছে জয়ন্তিয়া হিলস-এর কোলে অবস্থিত ক্র্যাং সুরি জলপ্রপাত। শিলং থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ পেরিয়ে যখন পৌঁছবেন, দেখতে পাবেন এক নীলচে জলাধার যেখানে নেমে আসছে পাহাড়ি ঝরনা। পর্যটকরা এই জলেই স্নান করে, ঘাটে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন।
শিবখোলা, শিলিগুড়ি: বাংলার নিজস্ব ‘ন্যাচারাল সুইমিং পুল’
ভিনরাজ্যে যাওয়ার দরকার নেই, যদি আপনি প্রকৃতির মাঝে একটি শান্ত জলাধারে স্নান করতে চান। শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ২৭ কিমি দূরে শিবখোলা নামক ছোট্ট গ্রামটি, পাহাড়ি নদীর পাশে অবস্থিত। এখানে নদীর ধারা মাঝেমধ্যে এতটাই শান্ত হয়ে যায় যে গ্রামের বাচ্চারা এটিকে সুইমিং পুল হিসেবে ব্যবহার করে। স্বচ্ছ জল, নুড়ি পাথর ঘেরা পরিবেশ, আর পাখির ডাক—সব মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
এবার আপনি ঠিক করুন কোথায় যাবেন?
বর্ষাকাল মানেই শুধু বৃষ্টি আর কাদা নয়। এই ঋতুতেই প্রকৃতি নিজের সেরা রূপ দেখায়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা এই প্রাকৃতিক সুইমিং পুলগুলি শুধুই ভ্রমণের স্থান নয়, বরং একেকটি স্বপ্নের মতো অনুভব। আপনি যদি সত্যিই প্রকৃতির প্রেমিক হন, অন্তত একটিবার ঘুরে আসতেই পারেন এই আশ্চর্য স্থানগুলি থেকে।