চড়া রোদের জায়গা এখন দখল করেছে গুমোট মেঘ। একটানা বৃষ্টির দিনে যখন প্রকৃতি শান্ত, তখনও আমাদের ত্বক কিন্তু অশান্ত হয়ে ওঠে। ত্বকে আর্দ্রতার মাত্রা বাড়তে থাকলে ভাইরাল সংক্রমণের আশঙ্কাও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। অথচ অনেকেই বুঝতে পারেন না কোন ভুলে সমস্যাটা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষাকালে শরীরের বাইরের ত্বকে সবচেয়ে বেশি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে। এর থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য দরকার মাত্র তিনটি সাধারণ অভ্যাস।
👕 হালকা ও সুতির পোশাকই রক্ষা করতে পারে
বর্ষায় আমাদের পরনের পোশাক একটি বড় ভূমিকা নেয়। গরম ও বর্ষার সংমিশ্রণে শরীর থেকে ঘাম ঠিকমতো বার হতে না পারলে ত্বক চিটচিটে হয়ে যায়। এর ফলে চর্মরোগের সম্ভাবনাও বাড়ে।
এই সময় মোটা ও সিনথেটিক কাপড়ের বদলে হালকা সুতির জামাকাপড় পরার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে ত্বক শ্বাস নিতে পারে, ঘাম জমে না এবং ফাঙ্গাল সংক্রমণের আশঙ্কাও অনেকটা কমে যায়।
🧼 যতটা কম কসমেটিক, ততটাই ভালো
বাইরে বেরোতে গেলে অনেকেই মুখে মেকআপ বা ভারী ক্রিম ব্যবহার করেন। কিন্তু বর্ষার বাতাসে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস মিশে এই প্রসাধনী পোরস বা ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে।
ফলে সহজেই দেখা দেয় ব্রণ, অ্যালার্জি কিংবা র্যাশের মতো সমস্যা। এর থেকে বাঁচতে এই সময় কম প্রসাধনী ব্যবহার করাই শ্রেয়। পরিষ্কার মুখে অল্প হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগালেই যথেষ্ট।
ত্বকের প্রাকৃতিক অবস্থাকে অক্ষুণ্ন রাখাই বর্ষাকালের সবচেয়ে ভালো কেয়ার।
👚 ভিজে জামাকাপড়ে বেশিক্ষণ না থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ
অনেক সময় অফিস বা স্কুল থেকে ফিরে কাপড় বদলাতে দেরি হয়ে যায়। বর্ষায় এই অভ্যাস মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
ভিজে পোশাক বা জুতায় জীবাণুর আক্রমণ দ্রুত হয়। ত্বকের যাঁদের আগে থেকেই সংবেদনশীলতা রয়েছে, তাঁদের ফাঙ্গাস, চুলকানি বা র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
তাই বাড়ি ঢুকেই জামাকাপড় বদলানো, পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে শুকনো হওয়া এবং পোশাক গরম জলে ধুয়ে রোদে শুকানো—এই অভ্যাস তিনটি কিন্তু ভাইরাল সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর।
🛑 উপসংহার: নিয়মে থাকুন, সংক্রমণ এড়ান
বর্ষা মানেই শুধু কদমফুল আর বৃষ্টির গান নয়—এটা ভাইরাস ও ছত্রাকের সবচেয়ে প্রিয় ঋতুও বটে! তাই ত্বককে সুস্থ রাখতে হলে বর্ষায় লাগবে একটু বাড়তি যত্ন।
সঠিক পোশাক নির্বাচন, অল্প প্রসাধনী ব্যবহার ও পোশাকের পরিচ্ছন্নতায় নজর রাখলেই এই সময় সুস্থ ত্বক বজায় রাখা সম্ভব।
নিজের প্রতি একটু যত্ন নিন, তবেই তো প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে মন ভরে!