বিচারপতি অমৃতা সিনহার এদিনের মন্তব্যে ফের একবার চর্চায় এল এসএসসি দুর্নীতিকাণ্ডের জেরে চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত। কারণ, ওই ভাতা প্রদানের নির্দেশিকায় কলকাতা হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
ভাতা দিতে চেয়েছিল রাজ্য, থামাল আদালত
রাজ্যের পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, যাঁদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদের অন্তর্বর্তীকালীন ভিত্তিতে মাসিক ভাতা দেওয়া হবে।
-
গ্রুপ সি কর্মীদের জন্য ধার্য হয়েছিল ২৫ হাজার টাকা,
-
আর গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য ২০ হাজার টাকা।
এই সিদ্ধান্ত নিয়েই আদালতে মামলা দায়ের হয়। মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, যাঁদের চাকরি অবৈধ বলে ঘোষিত, তাঁদের ভাতা দেওয়া সংবিধান ও আইনের পরিপন্থী।
বিচারপতির অন্তর্বর্তী সিদ্ধান্ত
বিচারপতি অমৃতা সিনহা শুক্রবার জানিয়ে দেন, রাজ্যের এই ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। অর্থাৎ এই সময়সীমার মধ্যে রাজ্য সরকার এই টাকা কোনও প্রাক্তন কর্মীকেই দিতে পারবে না।
চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে হবে
আদালত জানিয়েছে, রাজ্য সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে হলফনামা জমা দিতে হবে। সেই হলফনামার ভিত্তিতে দুই সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারীরা তাঁদের প্রতিউত্তর জানাতে পারবেন। সব মিলিয়ে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আদালতে এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা।
বিষয়টি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
রাজ্যের দাবি, যাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অপরাধ প্রমাণিত হয়নি, কিন্তু দুর্নীতির তদন্তের জেরে চাকরি খারিজ হয়েছে, তাঁদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা দিতে ভাতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মামলাকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন—একটি অবৈধ নিয়োগকে কি আর্থিক পুরস্কার দেওয়া যুক্তিযুক্ত? এই মামলার রায় বা অন্তর্বর্তী সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের জন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এখনও না এলেও উত্তেজনা তুঙ্গে
যদিও এই বিষয়ে এখনো কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরাসরি প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে মামলার ফলাফলে রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এই ভাতা ঘিরে রাজ্যের সিদ্ধান্তকেই অনেক বিরোধী দল রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল।