TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

টিউশন মাস্টার’ না শিকারি? চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার শিক্ষক, চাঞ্চল্য ডেবরায়

পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় এক গৃহ শিক্ষকের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। গ্রেফতার অভিযুক্ত, তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য।

Debapriya Nandi Sarkar

পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় এক গৃহ শিক্ষকের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। ছাত্রীটির পরিবারের অভিযোগ, বাড়িতে এসে টিউশন পড়ানোর নাম করে দিনের পর দিন ওই গৃহ শিক্ষক সুযোগ নিচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে আচমকাই তার আসল রূপ ফাঁস হয়ে যায়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে সকালবেলা প্রতিদিনের মতো পড়াতে আসেন এক গৃহ শিক্ষক। কিন্তু গতকাল সেই পড়ানোর পরিবেশ আর স্বাভাবিক ছিল না। পড়ার সময় আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেন শিশুটির মা। পরে মেয়েটি নিজেই জানায়, কীভাবে সে দিনের পর দিন অশালীন আচরণের শিকার হচ্ছিল।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

থানায় অভিযোগ, রাতেই গ্রেফতার অভিযুক্ত গৃহ শিক্ষক

ঘটনার কথা জানতে পেরে সরাসরি ডেবরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শিশুটির মা-বাবা। ডেবরা থানার পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং দ্রুত অভিযুক্তকে শনাক্ত করে। রাতেই গ্রেফতার করা হয় ওই গৃহ শিক্ষককে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত শিক্ষক স্থানীয় বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে পকসো (POCSO) আইনে মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষককে বুধবার দুপুর ১১টা নাগাদ মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়। আদালত তার বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

মুখে কুলুপ অভিযুক্তের, আতঙ্কে প্রতিবেশী মহল্লা

যদিও অভিযুক্ত এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। থানায় নেওয়ার সময় কিংবা আদালতে তোলার সময় সে কোনও মন্তব্য করেনি। কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছেন, “যে মানুষকে শিক্ষকের আসনে বসানো হয়, তার কাছ থেকে এ হেন আচরণ রীতিমতো লজ্জার।” স্থানীয়দের বক্তব্য, ছাত্রীটির পরিবার খুবই গরিব। সেই কারণে টাকার বিনিময়ে ঘরে গৃহ শিক্ষক রেখে পড়াশোনা চালাতে চাইছিল। কিন্তু এখন এই ঘটনার পর মেয়েটি ও তার পরিবার মানসিকভাবে বিধ্বস্ত।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

শিশু নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন, অভিভাবকদের চিন্তা বাড়ল

এই ঘটনার পর অভিভাবকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। সাধারণভাবে ‘গৃহ শিক্ষক’ শব্দটি যেখানে বিশ্বাসের প্রতীক, সেখানে এমন ঘটনা আস্থা ভেঙে দেয়। অনেকেই বলছেন, “বাচ্চাদের একা পড়াতে দেওয়া আর নিরাপদ নয়, বিশেষ করে মেয়েদের।” মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এমন ঘটনায় শিশুটির মনস্তত্ত্বে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়তে পারে। স্থানীয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি বা CWC-র তরফ থেকেও জানানো হয়েছে, শিশুটিকে কাউন্সেলিং দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তদন্তে পুলিশ, পকসো ধারায় কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস

ডেবরা থানার এক অফিসার জানান, “আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। পকসো আইনের বিভিন্ন ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রয়োজনে শিশুটির মেডিক্যাল পরীক্ষাও করা হবে।” পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের মোবাইল ও অন্যান্য জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, সে আগে অন্য কোথাও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে কি না। এলাকায় কেউ কিছু জানলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার আবেদনও জানানো হয়েছে।

একটি শিশু তার শিক্ষকের কাছে নিরাপত্তা আশা করে। কিন্তু যখন সেই শিক্ষকই শিকারি হয়ে ওঠে, তখন সমাজের কাঠামোই প্রশ্নের মুখে পড়ে। ডেবরার এই ঘটনা শুধুমাত্র একটি মেয়ের নয়, গোটা সমাজের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও, এমন ঘটনা প্রতিরোধে আরও কড়া পদক্ষেপ জরুরি।