Digha Jagannath Temple : এ যেন রীতিমতো ভক্তি-ভরা চমক! পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবার এক অভিনব পদক্ষেপে দিঘার জগন্নাথ ধামের প্রসাদ পৌঁছে দিচ্ছে সোজা মানুষের বাড়িতে। ২৭ জুন শুরু হতে চলা রথযাত্রার আগেই প্রায় ১ কোটি ৩৫ লক্ষ পরিবার এই ‘বিশেষ বাক্স’ হাতে পাবে। শুধু শহর নয়, বাংলার প্রত্যন্ত এলাকাতেও পৌঁছে যাবে এই পবিত্র উপহার।
কখন থেকে শুরু হচ্ছে বিতরণ?
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, ১৭ জুন ২০২৫ থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হবে এই ‘প্রসাদ বিতরণ অভিযান’। রথযাত্রা উপলক্ষে বিশেষ এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে। নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে প্রতিটি জেলার SDO ও BDO দপ্তরে। নির্দেশ রয়েছে—রথযাত্রার দিন অর্থাৎ ২৭ জুনের মধ্যেই বিতরণ শেষ করতে হবে। যদি কোনও কারণে নির্ধারিত সময়ে বিতরণ না হয়, তাহলে উল্টোরথ (৪ জুলাই)-র দিন এই প্রসাদ শেষমেশ পৌঁছে দিতে হবে।
কী থাকছে সেই বিশেষ বাক্সে?
প্রসাদের বাক্সের বিষয়টি যতটা ধর্মীয়, ঠিক ততটাই সাংস্কৃতিক এবং আবেগঘন। এই বাক্সে থাকবে—
- জগন্নাথ মন্দিরের ছবি
- প্যারা ও গজা (প্রচলিত মিষ্টান্ন)
- খোয়াক্ষীর, যা মন্দিরে পুজো দেওয়া হয়েছিল
এই সবকিছু অত্যন্ত যত্ন সহকারে প্যাকেজিং করা হবে স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা মহিলা স্বনির্ভর সমিতির মাধ্যমে। এই উদ্যোগে জড়িয়ে পড়ছেন বহু কর্মী এবং স্থানীয় উদ্যোক্তারা।
বিতরণের রোডম্যাপ কী?
রাজ্যের খাদ্যদফতরের “দুয়ারে রেশন” পরিকাঠামো এবার ব্যবহার হবে এই বিতরণেও। প্রতিটি ওয়ার্ডে, পাড়ায় পাড়ায় হবে মাইকিং—কোন দিনে, কোন জায়গা থেকে সেই প্রসাদ সংগ্রহ করা যাবে, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে। যারা নির্দিষ্ট দিনে উপস্থিত হবেন, তাঁরা সকলেই এই প্রসাদ হাতে পাবেন। কেউ বাদ যাবেন না, এমনটাই সরকার নিশ্চিত করতে চাইছে। কলকাতার জন্য পুরসভার কাউন্সিলরদের দিয়েছে বিশেষ দায়িত্ব। তাঁরা প্রতিটি বাড়িতে প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ার ‘রোডম্যাপ’ তৈরি করছেন।
শুধু বাংলায় নয়, দেশের নানা প্রান্তেও যাচ্ছে এই প্রসাদ
এই প্রসাদ শুধুমাত্র সাধারণ নাগরিকদের জন্য নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের কাছেও পাঠানো হচ্ছে এই প্রসাদ। ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে পৌঁছেছে এই বিশেষ প্যাকেট।
এই আয়োজনের তাৎপর্য কী?
দিঘার জগন্নাথ ধাম এখন শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, হয়ে উঠছে বাংলার ‘আস্থার কেন্দ্রবিন্দু’। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় মন্দির উদ্বোধনের দিনেই ঘোষণা হয়েছিল এই প্রসাদ বিলির। আর এবার তার বাস্তব রূপায়ণে মুগ্ধ সাধারণ মানুষ।
উল্লেখ্য, এটি নিছক একটি ‘প্রসাদ বিতরণ’ নয়, বরং এক সাংস্কৃতিক সংযোগ, ধর্মীয় ঐক্য এবং প্রশাসনিক সংবেদনশীলতার অনন্য নিদর্শন।