TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

Murder : বাড়ি চাওয়ার অপরাধে খুন বাবাকে! হাওড়ায় ইট দিয়ে থেঁতলে মারল ছেলেরা, সাক্ষী নাতিরাও!

সরকারি ঘরের টাকা নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্ব। টাকার জেরে হাওড়ার মাজু ঘোশালবাটিতে দুই ছেলে, বৌমা ও নাতির হাতে খুন ৬৪ বছরের বৃদ্ধ। হাড় হিম করা নৃশংসতার সাক্ষী প্রতিবেশীরাও।

Debapriya Nandi Sarkar

Murder : হাওড়ার মাজু ঘোশালবাটিতে ঘটে গেল এমন এক হৃদয়বিদারক ঘটনা, যা শুনে গা শিউরে উঠছে। বছর চৌষট্টির শৈল হাজরা শুধু সরকারি ঘরের টাকা পেয়েছিলেন বলেই, নিজের ছেলেদের হাতে খুন হলেন! চরম লোভ, সম্পত্তির নেশা আর নির্লজ্জ হিংস্রতার জেরেই প্রাণ হারাতে হল একজন বাবাকে—নিজের ছেলেদেরই হাতে।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

‘বাড়ি আমাদের চাই’—নাতি-ছেলের হুমকিতে অশান্তির সূচনা

সরকারি প্রকল্পে একটি ঘরের জন্য অর্থ পেয়েছিলেন শৈল হাজরা। সেই অর্থেই নির্মাণ হয়েছিল তাঁদের বাড়ি। কিন্তু সেখান থেকেই শুরু হয় কালো অধ্যায়। অভিযোগ, শৈলবাবুর দুই ছেলে, দুই বৌমা এবং নাতিরা দিনের পর দিন তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছিলেন। তাদের দাবি ছিল—বাড়ি তাঁদের নামে লিখে দিতে হবে। নইলে ‘মেরে ফেলবে’—এই হুমকিও তাঁরা দিতে পিছপা হয়নি। এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, “নাতিরা পর্যন্ত বলেছে, বুড়ো-বুড়ি মরলে ঘর ওরাই নেবে। অশান্তি হচ্ছিলই, তবে এমন ভয়াবহ কিছু হবে, কেউ ভাবেনি।”

ঘর ছাড়তে রাজি না হওয়াতেই নৃশংস খুন

শৈল হাজরা এবং তাঁর স্ত্রী ঘর ছাড়তে রাজি হননি। তাঁরা জানিয়ে দেন, এই বাড়িই তাঁদের শেষ আশ্রয়। এরপর থেকেই হুমকি ও অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানের কাছেও গিয়ে সাহায্য চান তাঁরা, কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অবশেষে গতকাল রাতে ঘটনার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে। দুই ছেলে, দুই বৌমা এবং নাতি মিলে শৈলবাবুকে ইট দিয়ে মাথায় একের পর এক আঘাত করতে থাকে। তাঁর স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাকেও মারে নাতি ও মেজো বউ। ইটের আঘাতে শৈল হাজরার মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

মৃত্যুর পরে পালাল বড় ছেলে, গ্রেফতার মেজো ছেলে ও বৌমা

ঘটনার পরেই আতঙ্কে এলাকা ছাড়ে বড় ছেলে। যদিও পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে মেজো ছেলে ও দুই বৌমাকে আটক করে। বর্তমানে জগৎবল্লভপুর থানার পুলিশ দফায় দফায় জেরা চালাচ্ছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, “ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের ফল। তদন্তে আরও তথ্য সামনে আসবে।”

ভবিষ্যতের বার্তা—লোভের আগুনে পুড়ছে পরিবার

এই ঘটনা কেবল একটি খুনের কাহিনি নয়, এটি বর্তমান সমাজের এক নির্মম প্রতিচ্ছবি। যেখানে বাবার চোখে দুনিয়া দেখার সেই ছেলে, একদিন শুধুমাত্র টাকার জন্য তাঁকেই মেরে ফেলতে পারে—এটা ভাবতেও গা শিউরে ওঠে। শৈলবাবুর স্ত্রী এখনও শঙ্কিত, তাঁর কথায়, “আমরা মরলে তবেই শান্তি পাবে ওরা।” এই ভয়, এই আতঙ্ক আর এই অসহায়তা যেন আমাদের সকলের কাছে এক বড় প্রশ্ন রেখে গেল—এই কী আমাদের পরিবারব্যবস্থা?

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের তরফে সমস্ত সরকারি ঘরপ্রাপ্ত পরিবারের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কথাও ভাবা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক সংঘর্ষ যাতে এভাবে নিষ্ঠুর পরিণতির দিকে না এগোয়, সেদিকেও নজর দিচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন।

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।