লোকসভা ভোট পর্ব শেষ, এখন চোখ সোজা ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিজেপি কর্মীসভা থেকে বড় বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দলীয় কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন—এবার সময় এসেছে পশ্চিমবঙ্গ দখলের।
তিনটি ‘মন্ত্র’—লক্ষ্য স্পষ্ট
বক্তব্যে অমিত শাহ বলেন, “আমাদের পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠন করতে হবে। অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে, হিন্দুদের দেশত্যাগ বন্ধ করতে হবে।” এই তিনটি বিষয়ে তিনি যে বিজেপির আগামী দিনের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজির ভিত্তি তৈরি করে দিলেন, তা বলাই বাহুল্য।
অমিত শাহর মতে, এই তিনটি ইস্যু আজ পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক ও প্রশাসনিক বাস্তবতার মূল সংকট। তাই এগুলো নিয়েই আগামী বিধানসভা ভোটে মুখোমুখি হবে বিজেপি।
কর্মীদের চাঙ্গা করলেন ‘চাণক্য’
বক্তব্যের সময় অমিত শাহ নিজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার দিকটিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমি জানি কঠিন পথ পেরিয়ে কিভাবে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়। পশ্চিমবঙ্গের মাটি পরিবর্তনের জন্য তৈরি। কর্মীরা যদি মন দিয়ে কাজ করেন, তাহলে কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না।”
উপস্থিত কর্মীদের প্রতিক্রিয়া ছিল প্রবল উদ্দীপনাপূর্ণ। অনেকেই বলছেন, এই সভা ছিল একধরনের মনস্তাত্ত্বিক ‘চার্জিং স্টেশন’—যেখান থেকে বিজেপির কর্মীবাহিনী আবার চাঙ্গা হয়ে ফিরে যাবে এলাকায়।
রাজ্যের উদ্দেশে বার্তা
অমিত শাহ তাঁর বক্তব্যে তৃণমূল সরকারকে সরাসরি আক্রমণ করতে ছাড়েননি। দুর্নীতি, তোষণনীতি, এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, “বাংলার মানুষ পরিবর্তন চাইছে। আর সেই পরিবর্তন আনবে বিজেপি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চোখে
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বক্তব্য শুধু কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর জন্য নয়, বিজেপির আগামী দিনের রোডম্যাপও স্পষ্ট করে দিল। ‘তিন মন্ত্র’ আসলে তিনটি বড় ভোট ইস্যু—যেগুলিকে সামনে রেখে গড়ে উঠবে রাজ্য জয়ের লড়াই।
উল্লেখ্য, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই কর্মীসভা যেন ছিল বিজেপির জন্য ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ওয়ার্ম-আপ। অমিত শাহ যে ভাষায় ও ভঙ্গিতে বার্তা দিলেন, তাতে বিজেপি এবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করতে প্রস্তুত বলেই ইঙ্গিত মিলেছে। এখন দেখার, এই তিন ‘মন্ত্র’ বাস্তবের ভোট ময়দানে কতটা কার্যকর হয়।