TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

Khidirpur fire : ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে বড় ঘোষণা, ১৩০০ দোকান পুড়লেও তৎপর মমতা সরকার

খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারে রাতের অগ্নিকাণ্ডে ছাই ১৩০০ দোকান। ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ঘোষণা।

Debapriya Nandi Sarkar

Khidirpur fire : খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজার যেন হঠাৎ রাতের আঁধারে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছিল। রবিবার রাত ১টা নাগাদ আচমকা আগুন লেগে যায় ঘিঞ্জি এই বাজার এলাকায়। মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন, একটার পর একটা দোকান গিলে নেয় আগুনের লেলিহান শিখা।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী, প্রায় ১৩০০টির বেশি দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। বাজারের ভিতরের সরু গলি, দাহ্য বস্তুতে ঠাসা দোকানঘর— সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। রাতভর লড়াই চালিয়ে ২০টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় দমকল বাহিনী নিয়ন্ত্রণে আনে আগুন।

ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘটনাস্থলে মমতা

সোমবার সকালে বিধানসভা থেকে সোজা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বাজারের চেহারা দেখে তিনি বলেন, “চোখের সামনে মৃত্যু হতে পারত। আরও বড় দুর্ঘটনা হতে পারত।” ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুনে নেন তাঁদের ক্ষতির খতিয়ান, আশ্বস্ত করেন সকলকে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

দোকান তৈরির প্রতিশ্রুতি, সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, যাঁদের দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গিয়েছে, তাঁদের ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি নতুন করে দোকান তৈরি করে দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। যাঁদের দোকান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

সাথে অস্থায়ী দোকানের জন্য বিকল্প জায়গা চিহ্নিত করার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমরা একটা জায়গা রেখেছিলাম অন্য কাজে, আপাতত সেখানেই বাজার সরিয়ে দেওয়া হোক। বাইরের কেউ আসতে পারবে না, এখানকার ব্যবসায়ীরাই চালাবেন।”

নিরাপত্তা নিয়ে বার্তা, তদন্তও চলবে

সরাসরি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “সিলিন্ডারগুলোকে মাঝেমধ্যে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এসি মেশিনও দেখতে হবে। না হলে জীবন চলে যেতে পারে।”

তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ সার্ভে শুরু হয়নি, তবে তদন্ত চলবে। বোঝার চেষ্টা হবে কীভাবে আগুন লাগল, কার কার দোকান পুড়েছে, কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেই সার্ভের ভিত্তিতেই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারিত হবে।

বাজার গড়ে তোলার দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নতুন বাজার গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “সরকার নিজের খরচে দোকান বানিয়ে দেবে। ক্ষতিগ্রস্তরা যেন দ্রুত কাজ শুরু করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করব আমরা।” এই প্রতিশ্রুতি শুধু অর্থের নয়, ভরসারও। অগ্নিকাণ্ডে সব হারানো মানুষগুলোর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছে।

দমকলমন্ত্রীর তৎপরতা ও স্থানীয়দের প্রশংসা

সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও। তিনি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বলেন, “আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণ খুঁজে বের করা হবে।” পকেট ফায়ারের আশঙ্কা থাকায় সকাল পর্যন্ত তল্লাশি চলে। স্থানীয় মানুষ, দমকল কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের অসামান্য সহযোগিতা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছে বলেও জানা গেছে।

কেন লাগল আগুন?

কেন এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড? দোকানে রাখা গ্যাস সিলিন্ডার, পুরনো বৈদ্যুতিক লাইন না কি কিছু অন্য কারণ? তদন্ত সেই উত্তর দেবে। তবে আপাতত একটাই কাজ—ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের ফের ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা করে দেওয়া। সেই কাজেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রাজ্য সরকার ও প্রশাসন।

খিদিরপুরের আগুনে ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাজারের ছাইয়ের নিচে এখন একটাই আশা—নতুন করে শুরু করার স্বপ্ন। মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতি সেই স্বপ্নের ভিত গড়ে দিক, এটাই চায় গোটা কলকাতা।

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।