ঘুম চোখে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে প্রতিদিন যাঁরা লোকাল ট্রেনে ওঠেন, তাঁদের কাছে যাত্রা মানেই ঘাম, ধাক্কাধাক্কি আর ক্লান্তি। সেই পরিচিত দৃশ্য বদলাতে চলেছে এবার। কারণ শিয়ালদহ ডিভিশনে শুরু হচ্ছে এক নতুন অধ্যায়—এসি লোকাল ট্রেন। ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে, রানাঘাট থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ছুটবে এই এসি ইএমইউ লোকাল ট্রেন। ইতিমধ্যে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি থেকে এই এসি ট্রেন এসে পৌঁছেছে শিয়ালদহে। ট্রায়াল রানও শেষ। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
তবে কি আরও দামি হবে যাতায়াত? জানুন আসল ভাড়া
অনেকেই ভেবেছিলেন, এসি ট্রেন মানেই বুঝি টিকিটের দাম আকাশছোঁয়া হবে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে—এই ট্রেনের ভাড়া ঠিক করা হয়েছে মধ্যবিত্তদের নাগালের মধ্যেই।
-
১০ কিলোমিটারের জন্য সিঙ্গল জার্নি ভাড়া: ₹২৯
-
১১-১৫ কিলোমিটারের জন্য: ₹৩৭
-
১০ কিলোমিটার পর্যন্ত মাসিক সিজন টিকিট: ₹৫৯০
-
১১-১৫ কিমি দূরত্বে মাসিক সিজন টিকিট: ₹৭৮০
অর্থাৎ যারা রোজ অফিসে যাতায়াত করেন, তাঁদের জন্য ‘মান্থলি কাটলে’ সুবিধার সুবিধা।
স্টপেজ? এখনও স্পষ্ট নয়, কিন্তু কী বলছে রেল?
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, কোন স্টেশনে থামবে এই এসি লোকাল, সেই তালিকা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে—শিয়ালদহ, রানাঘাট, মধ্যবর্তী ব্যস্ত স্টেশনগুলি যেমন বনগাঁ, দমদম, নদিয়া এলাকায় থামতে পারে এই ট্রেন।
প্রাথমিকভাবে কত কোচ, ভবিষ্যতে কী পরিকল্পনা?
আপাতত ১২ কোচের দুটি রেক দিয়ে শুরু হবে এই পরিষেবা। যাত্রী সাড়া পেলে ধাপে ধাপে এই এসি ট্রেনের সংখ্যা ও রুট বাড়ানো হবে। তবে পুরোটাই নির্ভর করবে যাত্রীর প্রতিক্রিয়ার উপর।
কেন এই এসি লোকাল এত গুরুত্বপূর্ণ?
কলকাতার গ্রীষ্ম মানেই অস্বস্তিকর গরম, আদ্রতা আর ভিড়। বিশেষ করে সকাল ও সন্ধের অফিস টাইমে লোকাল ট্রেনগুলিতে জায়গা পাওয়া মানে যুদ্ধ জয়। এই পরিস্থিতিতে এসি লোকালের মতো পরিষেবা নিঃসন্দেহে বড় স্বস্তি দেবে যাত্রীদের।
শুধু আরাম নয়, সময়, মানসিক শান্তি এবং স্বাস্থ্য—সব দিক থেকেই এই পদক্ষেপ যুগান্তকারী। এখন দেখার, রোজকার কর্মব্যস্ত যাত্রীদের মধ্যে এই এসি লোকাল কতটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আপনিও যদি শিয়ালদহ লাইনে যাতায়াত করেন, তাহলে নিশ্চয়ই এই ট্রেন আপনার দৈনন্দিন জীবনের অংশ হতে চলেছে।