কলকাতার যাতায়াত ব্যবস্থার প্রাণ শিয়ালদহ শাখা। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন এখান দিয়ে। এই শাখারই একাধিক MEMU লোকাল ট্রেনকে (Mainline Electric Multiple Unit) বন্ধ করে এবার চালু হতে চলেছে EMU (Electric Multiple Unit) ট্রেন। রেল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য এবং উন্নত পরিষেবার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত।
MEMU নয়, এবার EMU
বর্তমানে শিয়ালদহ শাখার একাধিক রুটে MEMU ট্রেন চালানো হচ্ছে। এই ট্রেনগুলি মূলত দুরপাল্লার লোকাল রুটে ব্যবহার করা হয়। তবে সমস্যা একটাই—এই ট্রেনগুলোতে অটোমেটিক দরজা নেই, সিটের ব্যবস্থা কম এবং যাত্রা অনেক সময় অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।
এই কারণে রেল এখন একঝাঁক MEMU ট্রেন তুলে দিয়ে সেখানে EMU ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। EMU ট্রেনগুলো কলকাতা শহর ও শহরতলির স্বাভাবিক যাত্রীদের চাহিদার সঙ্গে অনেক বেশি খাপ খায়। দরজা-জানালা নিরাপদ, কামরা বেশি এবং বসার ব্যবস্থাও তুলনামূলক ভালো।
কোন কোন ট্রেন বাদ যাচ্ছে?
রেলের নোটিশ অনুযায়ী, শিয়ালদহ শাখার মোট ১০টি MEMU ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হবে ৩১ মে, ২০২৫ থেকে। এর মধ্যে রয়েছে হরিদেবপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বনগাঁ, বহরমপুর রুটের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন। তবে আতঙ্কের কিছু নেই—এই রুটেই সমসংখ্যক EMU ট্রেন চালু করা হবে।
কী লাভ যাত্রীদের?
রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই বদলের ফলে যাত্রীরা আরও নিরাপদ, ঝাঁকুনি-মুক্ত ও আরামদায়ক সফর উপভোগ করতে পারবেন। পাশাপাশি ট্রেনের সময়সূচিও কিছুটা বদল করা হতে পারে যাতে ভিড় সামাল দেওয়া যায়।
একজন রেল আধিকারিক জানিয়েছেন— “শিয়ালদহ শাখায় প্রচুর যাত্রী চলাচল করেন। আমরা চেয়েছি, তারা যাতে আরও ভালো পরিষেবা পান। এই কারণে পুরনো ট্রেনগুলি বদলে আধুনিক ও যাত্রী-বান্ধব ট্রেন আনা হচ্ছে।”
যাত্রীদের কী মত?
নিত্যযাত্রীদের মধ্যে এই বদল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ বলছেন, “নতুন ট্রেনে যাতায়াত সুবিধাজনক হবে নিশ্চয়ই, কিন্তু সময়ের মধ্যে যদি না আসে তাহলে বিপদ।” আবার কেউ কেউ দুশ্চিন্তায়—পুরনো ট্রেন বন্ধ হওয়ার ফলে যেন পরিষেবায় ফাঁক না পড়ে। তবে অধিকাংশই রেলের এই উদ্যোগকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনাও রয়েছে
শুধু ট্রেন বদল নয়, শিয়ালদহ শাখায় ভবিষ্যতে নতুন লাইন, আধুনিক সিগন্যালিং ও পরিষেবার উন্নয়ন নিয়ে আরও পরিকল্পনা রয়েছে বলেই রেল সূত্রে জানা গেছে। রেলের এই উদ্যোগ যাত্রীসুবিধা ও আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে এক ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন অনেকে। এখন দেখার বিষয়, বাস্তবে এই বদল কতটা কার্যকর হয়।