SSC Controvercy : নতুন নিয়োগ বিধি জারি করে যেন আরও বেশি জটিলতার সামনে পড়ল রাজ্য সরকার। একদিকে যেমন হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ হল নতুন নিয়োগের নিয়ম, তেমনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা চাকরিহারাদের জন্য আর্থিক ভাতা নিয়েও শুরু হয়েছে আইনি লড়াই।
চাকরি হারানোদের ভাতা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ আন্দোলনকারীরা
১৪ মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, গ্রুপ C ও গ্রুপ D বিভাগে চাকরি হারানো SSC প্রার্থীদের জন্য ‘ওয়েস্টবেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম’ প্রকল্পের আওতায় মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে ছিল মানবিক যুক্তি—যারা আদালতের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের জীবিকার উৎস বন্ধ হয়েছে। কিন্তু এই ঘোষণার পরেই বিরোধিতা শুরু হয়। চারটি পৃথক মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, “শুধু কিছু নির্দিষ্ট চাকরিহারাকে কেন ভাতা? তাহলে ২০১৬-র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া সকল বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীর জন্যও তো সাহায্য থাকা উচিত।” অনেকের আশঙ্কা, এই ভাতার সুযোগে হয়তো দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীরাও সুবিধা পেয়ে যাবেন, যাঁরা অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছিলেন এবং পরে তা হারিয়েছেন।
একই দিনে শুনানি — নিয়োগ বিধি ও ভাতা দুটো নিয়েই
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের ভাতা ও SSC-র নতুন নিয়োগ বিধি, দুটি বিষয়েই মামলার শুনানি হতে চলেছে ৫ জুন কলকাতা হাইকোর্টে। ২০১৬ সালের ওয়েটিং লিস্টে থাকা কিছু চাকরিপ্রার্থী নতুন নিয়োগ বিধিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, নতুন বিধিতে যোগ্যতার মানদণ্ডে বড় রকম কাটছাঁট করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, প্রার্থীদের অ্যাকাডেমিক নম্বরের ওজন ৩৫ থেকে কমিয়ে ১০ করা হয়েছে, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বরাদ্দ হয়েছে ১০ নম্বর। এই পরিবর্তনের ফলে ২০১৬-র প্রস্তুতি অনুযায়ী প্রস্তুত হওয়া বহু প্রার্থী নতুন নিয়মে পিছিয়ে পড়বেন।
প্রশ্নের মুখে যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা
চাকরিহারাদের ভাতা প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এই ঘোষণায় যোগ্যতা-অযোগ্যতার সীমারেখা ঘেঁটে দিয়েছেন। তাঁদের চোখে, এই ভাতা যেন এক ধরনের বৈষম্য তৈরি করছে—যেখানে প্রকৃত যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা পড়ে থাকেন বঞ্চনার তালিকায়। আর নিয়োগ বিধির হঠাৎ বদলে যাওয়ায় উঠছে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার প্রশ্ন। অনেকেই বলছেন, “৯ বছর পর যদি নিয়োগ প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হয়, তবে পুরনোদের ন্যায্য সুযোগ কে দেবে?”
৫ জুনের দিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্য
SSC-র পুরনো জট খুলতে গিয়ে রাজ্য যে আরও নতুন জটিলতার মুখে পড়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন রাজ্যের চোখ ৫ জুনের দিকেই—হাইকোর্ট কী রায় দেয় SSC নিয়োগ বিধি এবং চাকরিহারাদের ভাতা সংক্রান্ত এই মামলাগুলিতে, তার ওপরেই নির্ভর করছে হাজার হাজার চাকরি প্রত্যাশীর ভবিষ্যৎ।