West Bengal Politics : আবার দিল্লির পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগামী ৯ জুন দু’দিনের সফরে দিল্লি যাচ্ছেন তিনি। লক্ষ্য একটাই—রাজ্যের কেন্দ্রের কাছে পড়ে থাকা বিপুল পরিমাণ বকেয়া আদায়। শাসকদলের দাবি অনুযায়ী, কেন্দ্রের কাছে পশ্চিমবঙ্গের পাওনা প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা। সেই অর্থ আদায়ের দাবিতেই এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
বকেয়া টাকার পাহাড়! কেন এত টাকা আটকে?
২০২০ সালের পর থেকে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ রাজ্যের হাতে আসেনি বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের।
বিশেষ করে একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা—এই প্রকল্পগুলির টাকাই আটকে রয়েছে বলে দাবি। তৃণমূল সূত্রে খবর, একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়ে চিঠি দেওয়া হলেও কার্যত কোনও সাড়া মেলেনি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কেন্দ্রের দরজায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
অতীতেও চাপ ছিল রাজ্য সরকারে
এটাই প্রথম নয়, অতীতেও এই দাবিতে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে, রাজ্যের আর্থিক চাপ তুলে ধরেছেন তিনি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে রাজ্য নিজস্ব তহবিল থেকেই একশো দিনের প্রকল্প ও আবাস যোজনার অর্থ মেটায়। ফলে রাজ্যের ভাণ্ডারে প্রবল চাপ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ দপ্তরের আধিকারিকরাও।
একই দিনে বিধানসভা অধিবেশনও, রাজনীতি কোন দিকে মোড় নেবে?
৯ জুন থেকে শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধিবেশন। এই সময়েই দিল্লি সফর—তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিধানসভায় একাধিক বিল পাশ এবং গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা নির্ধারিত। তবুও মুখ্যমন্ত্রীর সফর প্রমাণ করে, রাজ্যের বকেয়া আদায় এখন প্রশাসনের শীর্ষ অগ্রাধিকার।
বিজেপির কটাক্ষ—”এতদিনে দেখা করাটা স্বাভাবিক হয়েছে”
এই সফরকে ঘিরে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ করাটা স্বাভাবিক। বরং এতদিন পর যাওয়াটাই অস্বাভাবিক।” তাঁর প্রশ্ন, “নীতিআয়োগের বৈঠকে স্ট্যালিন, হেমন্ত সোরেন, সুখবিন্দর সুখু-রা অংশ নেন, কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কেন রাজ্যের প্রতিনিধি পাঠান না?” তাঁর মতে, জাতীয় স্তরের মঞ্চগুলি বর্জন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করছেন।
উল্লেখ্য, এই সফরের মাধ্যমে আবারও মুখ্যমন্ত্রী মুখোমুখি হচ্ছেন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। রাজনৈতিক শিবিরে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে—এই সাক্ষাৎ কী শুধুই বকেয়ার দাবিতে, নাকি রয়েছে আরও গভীর রাজনৈতিক বার্তা? আগামী কয়েকদিনে দিল্লির রাজনীতিতে কতটা শোরগোল পড়ে, তার দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।