Birbhum TMC Crisis : অনুব্রত মণ্ডলের এক হুমকিভরা অডিও ক্লিপ ঘিরে যখন রাজ্য রাজনীতি সরগরম, তখনই তৃণমূল কংগ্রেসের ঘরে বড় ভাঙনের খবর মিলল বীরভূম জেলা থেকে। সূত্রের খবর, সাঁইথিয়া বিধানসভার অন্তর্গত কুনুরি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে প্রায় ১৫০টি পরিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে।
এই দলবদল যে নিছকই স্থানীয় ক্ষোভ নয়, তা স্পষ্ট রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের কাছে। কারণ, কিছুদিন আগেই অনুব্রত মণ্ডলকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে organisational reshuffle করে তৃণমূল। এরপর থেকেই বিজেপিতে যোগদানের ঢল নামতে শুরু করে ঘাসফুল শিবিরে।
বিজেপির দাবি কী?
মঙ্গলবার সিউড়িতে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে এই ১৫০টি পরিবারকে হাতে পতাকা তুলে বিজেপিতে স্বাগত জানান বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা। তিনি অভিযোগ করেন, “তৃণমূল সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করছে এবং মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছে। সেই কারণেই আজ এত মানুষ আমাদের দলে আসছেন।”
তিনি আরও জানান, শুধু জুনের প্রথম সপ্তাহ নয়, মে মাসের শেষ দিকে নলহাটি বিধানসভা থেকেও ৫৫টি পরিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। তাঁর দাবি, “মাত্র তিন দিনের মধ্যে হাসন ও নলহাটি মিলিয়ে ২৫০টির বেশি পরিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে।”
তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ছে কেন?
তৃণমূল এখনও সরকারিভাবে এই দলবদলের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে অন্দরমহলে স্পষ্ট, অনুব্রতর অডিও-কাণ্ডে অস্বস্তি চরমে। ওই অডিও ক্লিপে এক ব্যক্তিকে হুমকি দিতে শোনা যায় অনুব্রতকে, যে নিয়ে তীব্র নিন্দায় মুখর হয়েছে বিরোধীরা। এমনকি তৃণমূলের অন্দরেও কেষ্টর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রের খবর, দল ইতিমধ্যে অনুব্রতকে ক্ষমা চাইতে বলেছে। তিনি সেই নির্দেশ মানলেও এখনও পুলিশের ডাকে হাজির হননি। এই অবস্থায় দলের প্রতি জনমানসে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
ভোটের আগে অশনি-সঙ্কেত?
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই দলবদল নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে ঘাসফুল শিবিরে। একের পর এক অঞ্চল থেকে কর্মী ও পরিবারের দলবদল রাজনৈতিক ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, “এটা নিছকই কনফিউশনের ফল নয়, বরং দীর্ঘদিনের অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ।”
উল্লেখ্য, বীরভূম জেলা দীর্ঘদিন ধরে অনুব্রতের একচ্ছত্র প্রভাবের অধীন ছিল। সেই ঘাঁটিতে যদি এমনভাবে ফাটল ধরে, তাহলে তা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের কাছে বড় সংকেত। বিশেষত অনুব্রতের বিতর্ক ও দলীয় বিভাজন যদি চলতেই থাকে, তাহলে ছাব্বিশের ভোটে তার মূল্য চুকাতে হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসকে।