TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

Smart Meter : ‘মিটারে কারচুপি?’ বাড়ছে বিল, বাড়ছে ক্ষোভ! বাধ্য হয়ে স্মার্ট মিটার প্রকল্পে ব্রেক চাপালো রাজ্য সরকার

স্মার্ট মিটারের নামে অতিরিক্ত বিল? একের পর এক জেলায় ছড়ালো বিক্ষোভ। বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকার দিল পিছিয়ে—স্মার্ট মিটার বসানো বন্ধ ঘোষণা।

Debapriya Nandi Sarkar

Smart Meter : রাজ্যে স্মার্ট মিটার প্রকল্পের উপর আপাতত টানলো ‘ব্রেক’। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই একের পর এক জেলা জুড়ে ক্ষোভ, বিক্ষোভ, অবরোধের জেরে অবশেষে বিদ্যুৎ দপ্তর জানিয়ে দিল— গৃহস্থবাড়িতে নতুন করে স্মার্ট মিটার বসানো আপাতত স্থগিত। সরকারি নথিতে একে বলা হয়েছে “অভিযোগ বিবেচনায় স্থগিতাদেশ”— কিন্তু বাস্তবে এটা জনরোষের কাছে একপ্রকার পরাজয়।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

বাড়ছে বিল, বাড়ছে সন্দেহ

স্মার্ট মিটার বসানোর পর থেকেই বিভিন্ন গ্রাহকের অভিযোগ— আগের চেয়ে দ্বিগুণ, কখনও তিনগুণ বেশি বিল আসছে। কারও মতে, কোনও বাড়তি ব্যবহার ছাড়াই ৩০০ টাকার বদলে বিল আসছে ৮০০ টাকা! স্মার্ট মিটার হলো এমন একটি প্রযুক্তি-নির্ভর মিটার, যাতে সিমকার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকের ব্যবহার সরাসরি বিদ্যুৎ দপ্তরের কন্ট্রোল রুমে পৌঁছে যায়। প্রিপেইড ব্যবস্থায় আগে টাকা দিলে তবেই মিলবে বিদ্যুৎ পরিষেবা। কিন্তু সমস্যা হলো— সেই ব্যবস্থায় ‘ভুল’ মাপ, অতিরিক্ত খরচ আর অনলাইন সিস্টেমের গলদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ।

বনগাঁ থেকে বারাসত— রাজ্যজুড়ে জ্বলছে বিদ্রোহের আগুন

সোমবারও জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বনগাঁর সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতেও রীতিমতো মিছিল করে বিদ্যুৎ দপ্তরের সামনে ধর্নায় বসল অল বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি অ্যাসোসিয়েশন-সহ বহু স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁদের একটাই দাবি— স্মার্ট মিটার বাতিল করো, পুরনো মিটার ফিরিয়ে দাও। “আমাদের ঠকানো হচ্ছে,” অভিযোগ এক মহিলার, “আগে যা ব্যবহার করতাম, এখনও তাই করছি— তবুও বিল দ্বিগুণ কেন?”

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

বিদ্যুৎ দপ্তরের প্রতিক্রিয়া— ‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে’

বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে— সরকারি অফিস, টেলিকম টাওয়ার ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে স্মার্ট মিটার সফলভাবে বসানো হয়েছে। কিন্তু গৃহস্থবাড়িতে কিছু অভিযোগ আসায় আপাতত প্রকল্প স্থগিত করা হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে কি আবার শুরু হবে? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি।

প্রযুক্তি না প্রতারণা— কোথায় ভুল?

স্মার্ট মিটার বসানোর পিছনে যুক্তি ছিল— স্বচ্ছতা, নির্ভুলতা এবং অনলাইন ব্যবস্থার সুবিধা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, গ্রামেগঞ্জে অনেকেই এখনও বুঝতে পারছেন না কীভাবে কাজ করে এই মিটার। রিচার্জ করতে না পারলে হঠাৎ বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া, বিল বোঝার জটিলতা— সব মিলিয়ে মানুষ কেবল ভয় পাচ্ছেন এই ‘স্মার্ট’ ব্যবস্থাকে।

রাজনৈতিক রঙ?

এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই বামপন্থী দলগুলি আন্দোলনে নেমেছে। সিপিএম এবং অন্যান্য দল অভিযোগ করছে— সাধারণ মানুষের উপরে জুলুম চালাতে এই ‘অবৈজ্ঞানিক’ মিটার বসানো হয়েছে। অন্যদিকে, সরকার বলছে— অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, উদ্দেশ্য ছিল সুবিধা, অসুবিধা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগামী পদক্ষেপ কী?

রাজ্য সরকার আপাতত থেমে গেলেও, প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গেল— স্মার্ট মিটার কি ভবিষ্যতের পথ, নাকি বর্তমানের বিভ্রান্তি? আর যদি ভবিষ্যতের পথও হয়, তা হলে কি আগে দরকার ছিল আরও সচেতনতা, আরও স্বচ্ছতা? মানুষ এখন শুধু বিদ্যুৎ নয়, উত্তর চাইছেন— কার এই ‘স্মার্ট’ পরিকল্পনা, আর কে নেবে এর দায়ভার?