TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

Kolkata Heritage House : বিধবা বিবাহের ইতিহাস আজও জীবন্ত! হেরিটেজ তকমার অপেক্ষায় কলকাতার এই ঐতিহাসিক বাড়ি, দেখুনত চেনেন কিনা

কলকাতার কাইলাশ বোস স্ট্রিটে অবস্থিত ১৯ শতকের ঐতিহাসিক বাড়ি, যেখানে বিদ্যাসাগরের উপস্থিতিতে প্রথম বৈধ বিধবা পুনর্বিবাহ হয়েছিল, এখন চায় 'হেরিটেজ' স্বীকৃতি। বাড়িটির গুরুত্ব, ইতিহাস ও বর্তমান আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন।

Debapriya Nandi Sarkar

একটা বাড়ি কেবল ইট-পাথরের কাঠামো নয়—তা হয়ে ওঠে ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। তেমনই এক প্রাচীন বাড়ি কলকাতার কাঁধে তুলে রেখেছে সমাজ সংস্কারের এক যুগান্তকারী মুহূর্ত। ৪৮A কাইলাশ বোস স্ট্রিটের সেই বাড়িটি আজ দাবি করছে তার প্রাপ্য ‘heritage tag’, যা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে মেলেনি।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

ইতিহাসের পাতায় লেখা সেই ৭ ডিসেম্বর

১৮৫৬ সালের ৭ ডিসেম্বর। কলকাতা তখন সামাজিক রক্ষণশীলতার চাদরে মোড়া। আর ঠিক সেই সময়েই সমাজ সংস্কারক ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বৈধ বিধবা পুনর্বিবাহ। ঘটনাস্থল—এই বাড়িটিই। কিশোরী কালিমতি দেবীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শ্রীশচন্দ্র বিদ্যরত্ন। বিদ্যাসাগরের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আয়োজিত এই বিয়ে ছিল সাহস ও সংস্কারের এক যুগলবন্দি। এই ঐতিহাসিক ঘটনার এক মাসের মধ্যেই, ১৬ জুলাই ১৮৫৬ সালে, ব্রিটিশ সরকার পাস করে ‘Hindu Widows’ Remarriage Act’। সমাজে বিধবা নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে এই আইনি স্বীকৃতি ছিল এক গৌরবময় সূচনা।

বাড়িটি কার?

এই বাড়ির তৎকালীন মালিক রাজকৃষ্ণ ব্যানার্জী ছিলেন বিদ্যাসাগরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সমাজচিন্তক। বাড়িটির মালিকানার ইতিহাসও জড়িয়ে আছে বাংলার নবজাগরণের সঙ্গে। তাঁর পরিবারের উত্তরসূরিরাই বর্তমানে এই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ করেন এবং তাঁরাই সম্প্রতি কলকাতা পৌরসভায় heritage status পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

হেরিটেজ স্বীকৃতি নিয়ে কী অবস্থান?

কলকাতা পৌরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক মাস আগে এই ঐতিহাসিক বাড়ির জন্য ‘heritage tag’ দেওয়ার আবেদন জমা পড়েছে। এখনও Grade নির্ধারণের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। একাধিক সরকারি সংস্থা ও পুরনো নথি ঘেঁটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বাড়িটিকে কাকে ধরা হবে—Grade I, II, না III। যদি বাড়িটি Heritage হিসেবে চিহ্নিত হয়, তবে তা সংরক্ষণের দায় সরকারি স্তরে আসবে এবং তা ভবিষ্যতের প্রজন্মের কাছে এক অমূল্য ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে রক্ষা পাবে।

কেন এই স্বীকৃতি জরুরি?

সমাজ সংস্কারের এক অন্যতম প্রাথমিক পদক্ষেপের স্মারক এই বাড়ি। শুধু নারী অধিকারের ইতিহাস নয়, বাংলার মানবিক অগ্রগতির পথচলার এক অনন্য প্রমাণ এই স্থান। বাড়িটি রক্ষা করা মানে শুধু পুরাতত্ত্ব নয়, মননে, চিন্তনে বিদ্যাসাগরের উত্তরাধিকারকে শ্রদ্ধা জানানো। শহরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা এই একখণ্ড ইতিহাস নতুন করে মনে করায়—একটা সমাজ কিভাবে ধীরে ধীরে বদলায়, আর তাতে কারা পথ দেখায়। এখন দেখার, পৌরসভা কবে এই বাড়িকে তার প্রাপ্য স্বীকৃতি দেয় এবং তা কীভাবে সংরক্ষণের পরিকল্পনা নেয়।