এই বছর রথযাত্রার প্রস্তুতি শুধু ধর্মীয় আচারেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, ডিজিটাল জগতে মিলেছে শুভেচ্ছার উৎসবও। ২০২৫ সালের রথযাত্রা পালিত হবে ২৭ জুন, আষাঢ়ের শুদ্ধ দ্বিতীয় তিথিতে। ভক্তি, ঐতিহ্য আর উৎসবের মিলনে এই মহোৎসব যেমন পুরীর রাস্তায় রথ টানার মাধ্যমে পূর্ণতা পায়, তেমনই সামাজিক মাধ্যমে ভাগ করে নেওয়া শুভেচ্ছা বার্তাও হয়ে উঠছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
উৎসবের মূল মঞ্চে তিন দেবতা
প্রতি বছরের মতো এবারও রথযাত্রা ঘিরে আয়োজনের কেন্দ্রে থাকবেন জগন্নাথদেব, বালভদ্র ও সুভদ্রা। পুরীর মূল মন্দির থেকে গুণ্ডিচা মন্দির পর্যন্ত প্রায় ৩ কিমি পথ অতিক্রম করে যাবে তাঁদের বিশাল রথ। এই যাত্রার প্রতীক হল একত্রে চলার, ভক্তি ও ঐক্যের বার্তা। হাজার হাজার ভক্ত সেই রথে অংশ নেন রশিতে টান দিয়ে।
শুভেচ্ছার নতুন ভাষা—ডিজিটাল মাধ্যমে উৎসব
এই বছর রথযাত্রা উপলক্ষে অনলাইনে শেয়ার করার জন্য প্রকাশিত হয়েছে ৫০-৫৫টির বেশি শুভেচ্ছা বার্তা, উদ্ধৃতি, GIF ও WhatsApp স্ট্যাটাস। একাধিক ওয়েব প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে রঙিন ছবি, হৃদয়স্পর্শী বার্তা ও ভক্তিপূর্ণ উক্তি। এই সব কনটেন্ট ব্যবহার করে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু বা সহকর্মীদের শুভেচ্ছা পাঠাচ্ছেন মানুষ। কেউ লিখছেন, “জয় জগন্নাথ”, কেউ আবার বলছেন, “ভক্তিতে ভরুক এই রথের দিন”, কেউ সাজিয়ে দিচ্ছেন প্রোফাইল ছবি বা স্ট্যাটাসে জগন্নাথদেবের চিত্র।
ধর্মীয় আবেগের পাশাপাশি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
রথযাত্রার তাৎপর্য শুধু ধর্মীয় নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুরাণ-আশ্রিত ইতিহাস। কংসের বিরুদ্ধে যাত্রা, ভাই-বোনের মিলন বা গুণ্ডিচা গৃহে ভ্রমণ—এই প্রতিটি ঘটনা রথযাত্রাকে দেয় এক ঐতিহাসিক মাত্রা। সমাজে একতা ও সম্প্রীতির বার্তাও বহন করে এই উৎসব। বিশেষজ্ঞদের মতে, রথযাত্রা শুধুমাত্র একদিনের ধর্মীয় আচার নয়, বরং তা একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন, যেখানে প্রত্যেকে অংশগ্রহণ করে উৎসবের রূপে। এবার এই অংশগ্রহণ আরও বিস্তৃত হয়েছে ডিজিটাল মাধ্যমে, যেখানে ভৌগোলিক সীমানা ভেঙে ছড়িয়ে পড়েছে শুভেচ্ছা ও আবেগের জোয়ার।
আগামী দিনে এই ধারা আরও বাড়বে?
সম্ভবত। প্রযুক্তির প্রসার এবং সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারে উৎসবের উদযাপন এখন ঘরের চার দেওয়ালের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে যাচ্ছে গোটা বিশ্বে। শুধু পুরী নয়, দিঘা, কলকাতা থেকে শুরু করে দেশের নানা প্রান্তে রথযাত্রা উপলক্ষে একইরকম উচ্ছ্বাস ধরা পড়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। ২০২৫ সালের এই উৎসব দেখিয়ে দিল, ভক্তি আর শুভেচ্ছা এখন একসঙ্গে হাঁটে বাস্তব রথের পাশাপাশি ভার্চুয়াল রাস্তাতেও।