আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তার পরেই আসছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। তন্ত্রসাধনার অন্যতম পবিত্র তিথি কৌশিকী অমাবস্যা। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের এই বিশেষ অমাবস্যা তিথিটি তন্ত্রসাধকদের কাছে এক অন্য মাত্রা নিয়ে আসে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে তারা মায়ের আরাধনা করলে সিদ্ধিলাভ সম্ভব হয়। অনেকেই এই তিথিতে তারাপীঠে গিয়ে মায়ের পূজা দেন। তবে যারা নানা কারণে সেখানে যেতে পারেন না, তারা বাড়িতে বসেই মায়ের পূজা করতে পারেন। তবে তার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। আসুন, জেনে নেওয়া যাক ঘরে বসে তারা মায়ের আরাধনার সঠিক পদ্ধতি ও বিধি-নিষেধ।
শুভ সময় ও তিথি
২০২৫ সালে কৌশিকী অমাবস্যা পড়েছে ২২শে অগাস্ট, শুক্রবার। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, অমাবস্যা তিথি শুরু হচ্ছে ২২শে অগাস্ট সকাল ১১টা ৫৮ মিনিটে এবং শেষ হচ্ছে ২৩শে অগাস্ট সকাল ১১টা ৩৭ মিনিটে। অর্থাৎ, এই সময়ের মধ্যেই মাকে সন্তুষ্ট করার জন্য পূজার আয়োজন করা যেতে পারে।
পূজার নিয়ম
পূজা শুরু করার আগে ঘর এবং পূজার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া আবশ্যক। মনে রাখা দরকার, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেবীর অসন্তোষের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, এঁটো বাসনপত্র পূজার স্থানে বা তার আশেপাশে রাখা একেবারেই উচিত নয়। মায়ের মূর্তি বা ছবি পরিষ্কার করে লাল জবা ফুলের মালা দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া অত্যন্ত শুভ। যদি জবা ফুল না পাওয়া যায়, তবে অন্য ফুল ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রসাদ হিসেবে পাঁচ প্রকার ফল এবং পাঁচ প্রকার মিষ্টি নিবেদন করা উচিত। পূজার সময় ঘি-এর প্রদীপ জ্বালানো বাধ্যতামূলক, কারণ এটি ইতিবাচক শক্তি আকর্ষণ করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধি-নিষেধ
যদি সম্ভব হয়, এই দিনে উপবাস করলে শুভ ফল পাওয়া যায়। যদি উপবাস সম্ভব না হয়, তবে অন্তত নিরামিষ আহার গ্রহণ করা জরুরি। এই পবিত্র দিনে খারাপ কাজ, ঝগড়া বা কটু কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। আন্তরিক ভক্তি নিয়ে মায়ের মন্ত্র জপ করা প্রয়োজন। যারা দীক্ষিত, তারা নিজেদের নির্দিষ্ট তন্ত্রমন্ত্র জপ করতে পারেন। তবে যে কেউ আন্তরিকভাবে মায়ের মন্ত্র জপ করলে তাতেও মায়ের আশীর্বাদ লাভ হয়। এই দিনে গরিব-দুঃখীদের খাদ্য, বস্ত্র বা অর্থ দান করলে পুণ্য অর্জন হয় বলে মনে করা হয়।
এই সকল নিয়ম মেনে চললে ঘরে বসেই কৌশিকী অমাবস্যার দিনে তারা মায়ের কৃপা লাভ করা সম্ভব। ভক্তি আর শুদ্ধ মনে মায়ের আরাধনাই এই দিনে সিদ্ধিলাভের মূল উপায়।