পেনশনের উপর নির্ভর করেন দেশের লক্ষ লক্ষ প্রবীণ নাগরিক। সম্প্রতি হঠাৎ ছড়িয়ে পড়ে একটি গুজব—EPF পেনশন পরিষেবা (EPF Pension) নাকি ২৮ জুন থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সূত্র হিসেবে উঠে আসে, একটি বিশেষ ফর্মে সই না করলে বন্ধ হবে মাসিক পেনশন। স্বাভাবিকভাবেই এই খবর ঘিরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে দেশের পেনশনভোগীদের মধ্যে। তবে সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা। শ্রম মন্ত্রকের অধীনস্থ কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থা (EPFO) এক বিবৃতিতে জানায়, EPF পেনশন পরিষেবা কোনওভাবেই বন্ধ হচ্ছে না, এবং এরকম কোনও ফর্মেরও কোনও অস্তিত্ব নেই।
বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ে কীভাবে?
গত সপ্তাহে কিছু সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দাবি করা হয়, একটি নতুন ফর্ম এনেছে EPFO, যেখানে সই না করলে পেনশন বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি কিছু জায়গায় এই ফর্ম বিক্রিরও খবর পাওয়া যায়। সেই থেকেই শুরু হয় সাধারণ মানুষের দৌড়ঝাঁপ। বিভিন্ন অফিসে গিয়ে খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি বহু মানুষ ওই তথাকথিত ফর্ম পূরণ করে জমাও দিতে শুরু করেন।
কেন্দ্রের বার্তা: “প্রতারকদের ফাঁদে পা দেবেন না”
এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো বিবৃতি জারি করে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক জানায়, এই গুজব পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হয়েছে। সরকার বা EPFO-এর পক্ষ থেকে পেনশন চালু রাখতে কোনও ফর্ম বা স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চালু করা হয়নি। এই গুজব থেকে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে সাধারণ মানুষকে। EPFO-এর তরফে গ্রাহকদের উদ্দেশে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে—“অপরিচিত কারও দেওয়া ফর্মে সই করবেন না। কোনও সরকারি ঘোষণার আগে এমন কাজ করবেন না যা প্রতারণার শিকার হতে পারে।”
কেন এই বিভ্রান্তি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার সরকারি পেনশন ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন নিয়ে খবর আসছে। Aadhaar linking, face authentication ইত্যাদির সঙ্গে অনেকেই খাপ খাওয়াতে না পেরে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন। এর সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু প্রতারক। তারা ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে পেনশনভোগীদের থেকে ব্যক্তিগত তথ্য বা অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে।
কী বলছেন পেনশনভোগীরা?
বহরমপুরের এক প্রবীণ পেনশনভোগী বলেন, “গত সপ্তাহে খবর পেয়ে খুব চিন্তায় পড়ে যাই। ছেলে কলকাতা থেকে এসে ফর্ম খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এখন বুঝলাম এটা পুরোটাই ভুয়ো খবর ছিল।”
EPFO-এর পরামর্শ
-
সরকারি ওয়েবসাইট ছাড়া কোনও উৎস থেকে তথ্য গ্রহণ করবেন না।
-
কোনোরকম সন্দেহজনক ফোন বা মেসেজ এলে EPFO হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন।
-
সরকারি ঘোষণার আগেই কখনও ব্যক্তিগত তথ্য জমা দেবেন না।
এই ঘটনার পর EPFO জানিয়ে দিয়েছে, পেনশন চালু আছে এবং আগামিদিনেও তা নিয়ম মেনে চলবে। শুধু নাগরিকদের সচেতন থাকতে হবে গুজব ও প্রতারণার হাত থেকে।