একদিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) একাধিক দফায় রেপো রেট কমাচ্ছে, অন্যদিকে বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক ফিক্সড ডিপোজিটে (FD) সুদের হার নামিয়ে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ জুন, ২০২৫ তারিখে কেন্দ্র স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদের হার নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
কোন কোন প্রকল্পের সুদের হার কমতে পারে?
সূত্রের খবর, পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (PPF), ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট (NSC) এবং সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম (SCSS)-এর মতো জনপ্রিয় স্কিমগুলির সুদের হার কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকের জন্য এই হারে পরিবর্তন আনা হতে পারে।
কেন বাড়ছে চাপ?
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই বছরেই মোট ১০০ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট কমিয়েছে—
-
ফেব্রুয়ারিতে: ২৫ bps
-
এপ্রিলে: ২৫ bps
-
জুনে: ৫০ bps
ফলে সুদের হার হ্রাস পেয়েছে, এবং এর প্রভাব পড়েছে বন্ড ইল্ড-এর ওপরও। ব্যাঙ্কগুলিও সেই অনুপাতে এফডি-র হারে কাটছাঁট করেছে।
ইতিহাস কী বলছে?
বর্তমানে PPF-এর সুদের হার ৭.১০ শতাংশ। এটি গত ৫০ বছরের মধ্যে অন্যতম নিম্নতম। এর আগে এই হার ২০০০ সালে ৯.৫% এবং ২০০৩ সালে ৮% ছিল। এমনকি ২০১৯-২০ অর্থবছরেও এই হার ছিল ৭.৯০%। কিন্তু ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এই হার একটানা অপরিবর্তিত রয়েছে। এখন তা কমে ৬.৫৭% এ নেমে আসতে পারে বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সুদের হার নির্ধারণ হয় কীভাবে?
PPF-এর সুদের হার নির্ধারণ হয় শ্যামলা গোপীনাথ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী। এই সূত্রে, PPF-এর হার ১০ বছরের সরকারি বন্ড ইল্ড থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেশি হওয়া উচিত। বর্তমানে ১০ বছরের বন্ড ইল্ড প্রায় ৬.৩২৫%, যা PPF-এর সম্ভাব্য হার কমার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যারা এই ধরনের স্কিমে বিনিয়োগ করতে চান, তারা যেন ৩০ জুনের আগেই সিদ্ধান্ত নেন। কারণ সুদের হার একবার কমে গেলে পরবর্তী তিন মাস পর্যন্ত তা অপরিবর্তিত থাকবে। স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সাধারণত নিশ্চিত রিটার্ন ও ঝুঁকিহীন সঞ্চয় খোঁজেন এমন বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে থাকেন। সেইজন্য সুদের হারের পরিবর্তন তাদের জন্য অর্থনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ।
রেপো রেট হ্রাস, বন্ড ইল্ড কমে আসা এবং আর্থিক মন্দা—সব মিলিয়ে সরকারের সামনে এখন সুদের হার কমানোর ‘মোক্ষম সময়’। ৩০ জুন কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কী হয়, তা লক্ষ রাখছে গোটা দেশের ছোট আমানতকারী শ্রেণি।