উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ফের সক্রিয় হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিন উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় তিন দিনের বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের দিকেই নজর বেশি
দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা—এই সমস্ত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির পাহাড়ি অঞ্চলে মাটি আলগা হওয়ার আশঙ্কাও করা হয়েছে, ফলে ভূমিধসের পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে।
দক্ষিণবঙ্গেও টানা বর্ষার ইঙ্গিত
কলকাতা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, নদিয়া ও হুগলি জেলায় আগামী তিন দিন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে। কিছু এলাকায় এক-দু’দিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও জানিয়েছে হাওয়া অফিস। কলকাতার বেশ কয়েকটি এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সল্টলেকে পড়েছে ১৩২ মিমি, দমদমে ৬৭ মিমি ও আলিপুরে ৮১ মিমি বৃষ্টি। চলতি বর্ষা মরশুমে শহরে মোট বৃষ্টির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৯৩ মিমি, যা মৌসুমী গড়ের প্রায় ৫২ শতাংশ। শুধু জুলাই মাসেই শহর পেয়েছে ৪৫১.৫ মিমি বৃষ্টি, যা এই মাসের গড় ৩৯৬ মিমির চেয়েও বেশি।
বজ্রপাত ও দমকা হাওয়ার সতর্কতা
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতির দমকা হাওয়া বইতে পারে। বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় ও মধ্য সমুদ্র অঞ্চল উত্তাল থাকবে ২৯ জুলাই পর্যন্ত। তাই ওই সময় পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা ইতিমধ্যেই সমুদ্রে রয়েছেন, তাঁদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।