কাশ্মীর ইস্যুতে ফের মুখ খুললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। বুধবার পাসরুর ক্যান্টনমেন্টে পাক সেনাবাহিনীর সামনে দাঁড়িয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি আলোচনায় বসার আহ্বান জানান তিনি। এদিন শরিফ বলেন—“চলুন, এই আগুন আমরা একসঙ্গে নিভাই। কাশ্মীর এবং জল সমস্যার সমাধানে মুখোমুখি বসে কথা বলি।”
পহেলগাঁও হামলার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতি
সম্প্রতি পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে দুই দেশের সম্পর্ক। ঘটনার পরপরই ভারত সরকার সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্থানের দোয়া আলোচনার প্রস্তাব অনেকেই কৌশলী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন।
জলচুক্তি নিয়ে হুমকির সুরে কথা পাকিস্তানের
সিন্ধু চুক্তি প্রসঙ্গে একধাপ এগিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের জল আটকে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। নীলম-ঝিলম প্রকল্পে আপনারা যে আঘাত হেনেছেন, তার জবাব দিতে গেলে আমরা বগলিহারসহ আরও বড় বাঁধও ধ্বংস করতে পারতাম।” তাঁর মন্তব্যে স্পষ্ট, আলোচনার ডাকের আড়ালে চাপ তৈরির কৌশলও রয়েছে।
“আমরা যুদ্ধ এবং আলোচনার জন্য প্রস্তুত”— বার্তা দিলেন শরিফ
এদিন বক্তব্যে সরাসরি না বললেও ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। শাহবাজ় বলেন, “আমরা যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত, আলোচনার জন্যও। এখন সিদ্ধান্ত আপনার।” এই বক্তব্য কার্যত মোদীর উদ্দেশেই ছোঁড়া বার্তা বলেই মনে করা হচ্ছে।
ভারত আগেই জানিয়েছে—সন্ত্রাস না থামলে আলোচনা নয়
পাকিস্তানের এই আলোচনার ডাক একেবারেই নতুন নয়। ভারত বহুবারই জানিয়ে দিয়েছে, সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না হলে কোনও আলোচনা সম্ভব নয়। বিদেশমন্ত্রকের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে—সিন্ধু চুক্তি স্থগিতই থাকবে যতক্ষণ না সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ হয়।
আমেরিকার মধ্যস্থতা নিয়েও ফের ইঙ্গিত
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়েও পাকিস্তান একই রকম আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল, এমনকি মধ্যস্থতার জন্য আমেরিকাকে ধন্যবাদও জানিয়েছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু ভারত বরাবরই বলে এসেছে, কাশ্মীর সম্পূর্ণভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়—এখানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের প্রশ্নই ওঠে না।
রাজনৈতিক চাপে ‘আলোচনার নাটক’?
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সামরিক অভিযান এবং কূটনৈতিক দাপটের মাঝে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি পেতে চাইছে। এর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ থেকেও দৃষ্টি ঘোরাতেই এই আলোচনার প্রস্তাব আসছে।