সম্প্রতি এক ইন্ডিগো বিমানের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। খারাপ আবহাওয়ার কারণে মাঝ আকাশে বিপদে পড়েছিল ভারতের ইন্ডিগো সংস্থার একটি যাত্রীবাহী উড়ান। সেই সময় পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে নিরাপদে অবতরণ করতে চেয়েছিল বিমানটি। তবে পাকিস্তানের তরফ থেকে কোনও রকম সাহায্যই করা হয়নি। এই অমানবিক সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয় প্রবল বিতর্ক।
ডিজিসিএ-র তরফে জারি হল নতুন নির্দেশিকা
এই ঘটনার পরই ভারতের অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা DGCA (Directorate General of Civil Aviation) শুক্রবার একটি নোটিশ টু এয়ারম্যান (NOTAM) জারি করে জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানের জন্য ভারতের আকাশসীমা আরও এক মাসের জন্য পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে। নতুন সময়সীমা অনুযায়ী, আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত পাকিস্তানি উড়ান সংস্থাগুলি ভারতের আকাশে প্রবেশ করতে পারবে না।
সামরিক ও বাণিজ্যিক—সব রকম উড়ানেই নিষেধাজ্ঞা
এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র একটি বা দুটি সংস্থার উপর নয়, বরং পাকিস্তানের নিবন্ধিত, পরিচালিত, মালিকানাধীন বা লিজ নেওয়া সমস্ত সামরিক ও বাণিজ্যিক বিমানের উপর প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ, পাকিস্তানের জাতীয় উড়ান সংস্থা PIA সহ অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলিও ভারতের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারবে না।
পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই সতর্ক ভারত
উল্লেখ্য, এর আগেই ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তানি বিমানের জন্য ভারতের আকাশসীমা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া একটি জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ। সেই হামলার পরেই দিল্লির তরফ থেকে কড়া মনোভাব নেওয়া হয়।
পাকিস্তানও নেয় পাল্টা পদক্ষেপ
ভারতের এই সিদ্ধান্তের আগে পাকিস্তানও তাদের আকাশসীমা বন্ধ রেখেছে ভারতীয় উড়ান সংস্থাগুলির জন্য। প্রথমে তারা ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করলেও, পরে সেটি বাড়িয়ে ২৪ জুন পর্যন্ত করেছে। ঠিক তার পরপরই ভারতের পক্ষ থেকেও সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক নিয়মে সময়সীমা পেরোনো নিয়ে বিতর্ক
আন্তর্জাতিক অসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO)-র নিয়ম অনুযায়ী, কোনও দেশ সাধারণত এক মাসের বেশি সময় তাদের আকাশসীমা বন্ধ রাখতে পারে না। ফলে দুই দেশের এমন টানা নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক স্তরে চাপের সৃষ্টি করছে।
উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বরাবরই উত্তপ্ত। তবে ইন্ডিগো বিমানের ঘটনার পর ভারতের এই কড়া পদক্ষেপ জানিয়ে দিল, যে কোনও অবমাননার জবাব দেওয়ার মতো প্রস্তুতি এখন দিল্লির রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের বেসামরিক বিমান যোগাযোগে বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।