সপ্তাহের শুরুতেই বড় রাজনৈতিক বৈঠকে বসতে চলেছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। ৩ জুন, সোমবার, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হবে এই বিশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠক। উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের সব মন্ত্রী। রাজ্যের প্রশাসনিক ভবনে এই বৈঠককে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা—বিশেষ করে যখন কেন্দ্র এবং রাজ্যের সম্পর্ক ফের একবার সংঘাতের মোড়ে পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণ ঘিরে চাপ
২৯ মে আলিপুরদুয়ারে নির্বাচনী জনসভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তোলেন তিনি। দুর্নীতি, প্রশাসনিক স্বচ্ছতার অভাব, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে সহযোগিতা না করার অভিযোগ তোলা হয় রাজ্যের বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই সরকার কি আপনাদের প্রাপ্যটা দিচ্ছে?”
অমিত শাহের কড়া ভাষা
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কিছুদিনের মধ্যেই, ১ জুন, রবিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সভা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ওঠে বিস্ফোরক অভিযোগ। কটাক্ষ করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্ব ও প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়েও। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের এই ধারাবাহিক আক্রমণে রাজ্য রাজনীতিতে চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
নবান্নে কি হতে পারে?
৩ জুনের মন্ত্রিসভা বৈঠকে শুধু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের বিরুদ্ধে এই “দুই শীর্ষস্তরের আক্রমণ” কতটা গুরুত্ব পাবে বৈঠকে, তা এখন দেখার বিষয়। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের নানা প্রকল্পে রাজ্যের বঞ্চনার বিষয়টি উত্থাপন হতে পারে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের আচরণ নিয়ে কৌশল নির্ধারণ করতে পারে রাজ্য সরকার।
নজরে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত
এই বৈঠকে রাজ্য সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ তুঙ্গে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতে এমন সময়ে কড়া বার্তা দিয়ে রাজনীতিকে একাধিক বার চমক দিয়েছেন। এবারও কি সেই ধারা বজায় থাকবে? নাকি রাজনৈতিক কৌশলে কিছুটা নমনীয় হবেন তিনি? বিরোধীদের মতে, এই বৈঠক রাজ্য সরকারের “আত্মবিশ্লেষণের সুযোগ”, আর শাসক দলের মতে—“কেন্দ্রের আক্রমণের পাল্টা জবাবের মঞ্চ”।
উল্লেখ্য, বাঙালির নজর এখন নবান্নে। মুখ্যমন্ত্রী কী বলেন, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত কোন পথে মোড় নেয়—তা রাজ্যের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাত যে মাত্রা নিচ্ছে, এই বৈঠক সেই উত্তাপ আরও বাড়াবে নাকি নবান্ন থেকে আসবে রাজনৈতিক শান্তির বার্তা—সে প্রশ্নের উত্তর মিলবে সোমবার।