হাওয়ায় বিপদ! আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার জের পৌঁছল কলকাতার আকাশে। এবার দমদম বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকায় বহুতল নির্মাণে লাগাম টানতে কড়া নির্দেশিকা জারি করল কর্তৃপক্ষ। বাড়ি গড়তে চাইলে লাগবে এয়ারপোর্ট অথরিটির অনুমোদন—তা-ও অনলাইনে।
২০ কিমি জুড়ে নিয়মের জাল
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে ২০ কিমি রেডিয়াসের মধ্যে সব ধরনের উচ্চতাসম্পন্ন নির্মাণে লাগু হয়েছে এই নতুন নিয়ম। এই এলাকার মধ্যে পড়ছে মধ্যমগ্রাম, উত্তর দমদম, নিউ বারাকপুর, দক্ষিণ দমদম, বিধাননগরের মতো ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল।
এয়ারপোর্ট অথরিটির ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক
নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, কেউ যদি ভবিষ্যতে ওই এলাকার মধ্যে ১৫ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার কোনও নির্মাণ করতে চান, তাহলে তাঁকে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (AAI)-র থেকে NOC (No Objection Certificate) নিতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনেই করতে হবে। অনুমতি ছাড়া কোনও নির্মাণকাজ শুরু হলে তা আইনবিরুদ্ধ বলে বিবেচিত হবে।
পুরনো নির্মাণ? ভাঙা হতে পারে!
খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় ৩৭৭টি নির্মাণকে ‘অবস্ট্রাকশন’ বা বাঁধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে ৯০টি অবৈধ নির্মাণ ইতিমধ্যে সরানো হয়েছে। বাকি ২৮৭টি ভবন এখন প্রশাসনের নজরে। যেগুলির উচ্চতা বিমান চলাচলে বিপত্তি ঘটাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, সেগুলি হয় ভেঙে ফেলা হবে অথবা মালিকপক্ষকে উচ্চতা কমাতে হবে।
সময়মতো না মানলে পদক্ষেপ নিশ্চিত
নতুন নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, জমির মালিক বা নির্মাণ সংস্থাগুলিকে ৬০ দিনের মধ্যে AAI-কে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুমোদন না নিলে, জেলা প্রশাসক ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে।
উদ্দেশ্য একটাই—আকাশপথের নিরাপত্তা
AAI সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে বেশ কয়েকটি বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে উচ্চ-উচ্চতা নির্মাণের সমস্যা উঠে এসেছে। তাই বিমানবন্দরের আশপাশে যাতে নিরাপদ আকাশপথ বজায় থাকে, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, শহরাঞ্চলে জনঘনত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আকাশপথ সংলগ্ন এলাকায় পরিকল্পনাহীন ভাবে নির্মাণ বাড়ছে। এমন অবস্থায় এধরনের নিয়ন্ত্রণ জরুরি।