রাজ্য রাজনীতিতে ফের উত্তেজনা। এবার কেন্দ্রবিন্দুতে বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র অমিত মালব্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিতর্কিত পোস্টের জেরে তাঁকে নোটিস পাঠাল পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। পোস্টটি ইতিমধ্যেই মুছে ফেলা হয়েছে, তবে ততক্ষণে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক এবং রাজনৈতিক চাপানউতোর।
কী ছিল সেই পোস্টে?
গত শুক্রবার, অমিত মালব্য তাঁর X (প্রাক্তন টুইটার) হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্ট করেন। তাতে এক মৃত তরুণীকে নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। পোস্টে আরও কিছু রাজনৈতিক মন্তব্যও ছিল যা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তীব্র আপত্তি তোলে। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ ওঠে, মৃত নাবালিকাকে নিয়ে এমন মন্তব্য অত্যন্ত অমানবিক ও অনৈতিক। তাঁদের দাবি, এই ধরনের পোস্ট একদিকে যেমন শিশুর সম্মানহানি করে, অন্যদিকে তাতে আইনি সীমা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
কমিশনের পদক্ষেপ
এই অভিযোগের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন বিষয়টি সুয়ো মটো (নিজে থেকেই) গ্রহণ করে। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ওই পোস্টে এক শিশুর সম্মান এবং গোপনীয়তা ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই, কেন এই ধরনের পোস্ট করা হল, এবং তা কোন তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে—সেই বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে অমিত মালব্যকে নোটিস পাঠানো হয়েছে।
রাজনৈতিক চাপানউতোর
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল কংগ্রেস বলছে, “একজন জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক মুখপাত্র কীভাবে এমন একটি অসত্য এবং সংবেদনশীল পোস্ট করতে পারেন, তা ভাবতেই অবাক লাগে।” অন্যদিকে, বিজেপি সূত্রে জানানো হয়েছে, অমিত মালব্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি, তবে তাঁর পোস্ট ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে বলেই বিষয়টি আপাতত বন্ধ হয়েছে বলে তাঁদের মত।
আইনি দিক
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও নাবালিকার সম্মান ক্ষুণ্ন করে সামাজিক মাধ্যমে কিছু লেখা পক্সো আইন ও আইটি আইনের আওতায় গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। এই ক্ষেত্রে তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশও স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা নিতে পারে।
কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
কমিশন সূত্রে খবর, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেলে, বিষয়টি চাইল্ড রাইটস কমিশন অফ ইন্ডিয়া ও সাইবার সেল-এর কাছে পাঠানো হতে পারে। এমনকি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও ভাবনা রয়েছে কমিশনের।