Indus Waters Treaty : দীর্ঘদিন ধরে চলা সিন্ধু জলচুক্তির পাতার পর পাতা এ বার চিরতরে বন্ধ হতে চলেছে। পাকিস্তান আর ভারতের নদী থেকে বিনা বাধায় জল পাবে না, সাফ জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর ঘোষণা—ইন্দুস ওয়াটারস ট্রিটি আর কখনও কার্যকর হবে না। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
জল নয়, প্রয়োজনের সঠিক ব্যবহার
সাংবাদিক বৈঠকে অমিত শাহ জানান, আড়াই মাস আগেই চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় থেকেই কেন্দ্র প্রস্তুতি নিতে শুরু করে, যাতে পাকিস্তানের অংশের জল দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যায়। শস্য উৎপাদনের প্রয়োজন মেটাতে রাজস্থানে জল সরবরাহের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে।
খাল খননের সম্ভাব্যতা যাচাই
এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথে কেন্দ্র ১১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল খননের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে। এই খাল তৈরি হলে পাকিস্তানে যাওয়ার বদলে ওই জল রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা সহ শুষ্ক রাজ্যগুলিতে কৃষিকাজে কাজে লাগবে। কেন্দ্রীয় সরকারের মতে, ভারতের কৃষি অর্থনীতিতে এই পদক্ষেপ এক বড় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
পাকিস্তানের তীব্র আপত্তি
এই সিদ্ধান্তে প্রবল আপত্তি তুলেছে পাকিস্তান। তাদের দাবি, ভারতের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। ইসলামাবাদের বক্তব্য, ইন্দুস ওয়াটারস ট্রিটি ছিল একটি বৈধ আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা ১৯৬০ সালে ভারতের সঙ্গে সই হয়েছিল। চুক্তি একতরফাভাবে বাতিল করা হলে, পাকিস্তান তা ‘যুদ্ধ ঘোষণা’-র শামিল বলে মনে করবে।
আন্তর্জাতিক আইনি লড়াইয়ের পথে পাকিস্তান
পাকিস্তান সরকার জানিয়ে দিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক আদালতে এই চুক্তি বাতিলের বিরোধিতা করবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। দু’দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কেন্দ্রের অবস্থান অনড়
তবে এতকিছুর মাঝেও কেন্দ্রের অবস্থানে কোনও নড়চড় হয়নি। অমিত শাহের সাফ বক্তব্য—দেশের জল সম্পদ দেশের জনগণের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে। কারও রক্তচক্ষুতে ভারত ভয় পায় না। ‘দেশ আগে, কূটনীতি পরে’—এই নীতিতেই চলবে মোদী সরকার, বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।