নমিনাল রিটার্ন দেখেই নিশ্চিন্ত? তাহলে আর্থিক ভবিষ্যতের ছবিটা বুঝতে ভুল করছেন আপনি। কারণ, নামমাত্র উচ্চ রিটার্নের আড়ালে লুকিয়ে আছে মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) আর করের (Tax) বিষম ধাক্কা, যা আপনার সারা জীবনের সঞ্চয়কে প্রায় মূল্যহীন করে দিতে পারে—বলছে বিশেষজ্ঞ মহল।
‘১০% রিটার্ন’ মানেই লাভ নয়
আজকের দিনে বহু বিনিয়োগকারী বিজ্ঞাপন দেখে বা পরামর্শদাতার কথায় ৮%–১০% রিটার্ন পেলেই ভাবেন, এটি যথেষ্ট। কিন্তু বাস্তবে, যদি মুদ্রাস্ফীতি ৫% থাকে এবং উপরন্তু কর বাবদ ২০% কেটে যায়, তাহলে হাতে থাকা প্রকৃত রিটার্ন (real return) দাঁড়াতে পারে মাত্র ৪% বা তারও কম। অর্থাৎ সঞ্চয় থাকলেও তা মূল্য হারাতে থাকে চুপিসারে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) চলতি অর্থবর্ষে মোট মুদ্রাস্ফীতির হার প্রায় ৫.২% থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। এই অবস্থায়, যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে উৎসাহী, তাদের প্রকৃত লাভ নির্ভর করবে কতটা মুদ্রাস্ফীতি ও কর বিবেচনা করে তারা পরিকল্পনা করছে তার ওপর।
খরচ আছে আরও
শুধু কর বা মুদ্রাস্ফীতি নয়, মিউচুয়াল ফান্ড বা PMS-এর মতো ব্যবস্থাপনা নির্ভর বিনিয়োগে থাকে ম্যানেজমেন্ট ফি ও অপারেটিং খরচ, যা প্রকৃত রিটার্ন আরও কমিয়ে দেয়। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন—বিনিয়োগের আগে সমস্ত খরচ বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
কোন পথে উপায়?
বিশ্লেষকদের মতে, ডাইভার্সিফায়েড (diversified) পোর্টফোলিও তৈরি করাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সঠিক কৌশল। ইকুইটি মিউচুয়াল ফান্ড, ETF, রিয়েল এস্টেট, কর্পোরেট বন্ড অথবা ফিনটেক নির্ভর ফিক্সড ইনকাম পণ্য—সব কটি ক্ষেত্রেই কিছুটা করে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কমে এবং মুদ্রাস্ফীতির চেয়েও বেশি রিটার্ন পাওয়া সম্ভব।
লক্ষ্য নির্ভর পরিকল্পনা জরুরি
আরও একটি জরুরি বিষয় হল লক্ষ্যভিত্তিক বিনিয়োগ কৌশল (goal-based investing)। শুধু রিটার্নের হিসেব নয়, বরং আপনি আগামী ৫–১০ বছরে কী করতে চান, তা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করলে তবেই দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আসবে। সেই সঙ্গে দরকার নিয়মিত পোর্টফোলিও রিভিউ ও পুনর্গঠন।