সম্প্রতি এক খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বাজারে—‘SBI বিক্রি হয়ে গেল Jio-র হাতে!’ অনেকেই ধন্দে পড়েছেন এই তথ্য নিয়ে। তবে আদতে এমন কিছু হয়নি। বিষয়টি আসলে Jio Payments Bank (JPBL)-এর আংশিক শেয়ার হস্তান্তর সংক্রান্ত, যার সঙ্গে SBI (State Bank of India)-এর মূল ব্যাঙ্কিং কার্যকলাপের কোনও সম্পর্ক নেই। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, SBI সম্প্রতি Jio Payments Bank-এ তাদের মালিকানাধীন ১৭.৮৩% শেয়ার Jio Financial Services (JFS)-এর কাছে বিক্রি করেছে। এই বিক্রির আর্থিক পরিমাণ ₹১০৪.৫৪ কোটি টাকা, এবং এতে প্রতিটি শেয়ারের দাম নির্ধারিত হয়েছে ₹১৩.২২। এর ফলে Jio Financial Services এখন JPBL-এর সম্পূর্ণ মালিক। এর আগে JFS-এর হাতে JPBL-এর ৮২.১৭% শেয়ার ছিল। SBI-এর বিক্রির পরবর্তী মুহূর্তেই JFS হয়ে উঠেছে এই ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যাঙ্কের শতভাগ শেয়ারধারী।
কীভাবে সম্পন্ন হল এই চুক্তি?
এই শেয়ার হস্তান্তর কোনও তাৎক্ষণিক বা হঠাৎ সিদ্ধান্ত নয়। ২০২৫ সালের ৪ মার্চ, JFS বোর্ড এই লেনদেন অনুমোদন করে। এরপর ৪ জুন, এই প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। সব আইনি প্রক্রিয়া ও শর্ত পূরণ করে এই চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়।
বিভ্রান্তির কারণ কী?
সোশ্যাল মিডিয়া এবং কিছু অনির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে এই খবর ছড়ায় যে, ‘SBI পুরো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে’ বা ‘Jio কিনে নিয়েছে SBI’। কিন্তু এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। SBI শুধু মাত্র JPBL-এ থাকা নিজের শেয়ার বিক্রি করেছে, মূল SBI বা তার কোনও কোর ব্যাঙ্কিং শাখা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। এই বিভ্রান্তি দূর করতে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, এটি একটি নির্দিষ্ট যৌথ উদ্যোগ সংক্রান্ত শেয়ার হস্তান্তর মাত্র। আর JPBL নিজে একটি Payments Bank, যার কার্যক্রম সীমিত—এতে জমা নেওয়া যায়, কিন্তু ঋণ বা ক্রেডিট দেওয়া যায় না।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
বিশেষজ্ঞদের মতে, SBI এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মূল ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় মনোনিবেশ করার জন্য। অপরদিকে, JFS-এর উদ্দেশ্য ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং এবং ফিনটেক পরিসরে তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও শক্ত করা। ডিজিটাল অর্থনৈতিক পরিকাঠামো মজবুত করার লক্ষ্যে JFS-এর হাতে JPBL সম্পূর্ণভাবে থাকাটা তাদের কৌশলগত পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
কী প্রভাব পড়তে পারে?
এই লেনদেনের সরাসরি প্রভাব বাজারে খুব বেশি পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে JFS এবং Reliance গ্রুপ ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে নতুন উদ্যোগ বা সম্প্রসারণের পথে হাঁটতে পারে। আবার SBI তার প্রধান ব্যাঙ্কিং কাঠামোকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে পারবে এই অংশীদারিত্ব থেকে বেরিয়ে এসে।