দুর্ভাগ্যবশত যদি কোনও যাত্রী মেট্রো দুর্ঘটনার শিকার হন, তবে এবার সেই যাত্রীর পরিবার বা আহত ব্যক্তি পাবেন আগের চেয়ে দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ। ২০২৫ সালে সংশোধিত মেট্রো রেলওয়ে (দাবি পদ্ধতি) বিধি অনুযায়ী, এখন থেকে মৃত্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ₹ ৮ লক্ষ টাকা এবং গুরুতর আঘাতে ₹ ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
কী পরিবর্তন হল নিয়মে?
আগে মেট্রো দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জন্য পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে সর্বোচ্চ ₹ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হতো। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এই পরিমাণ বাড়িয়ে ₹ ৮ লক্ষ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যদি কোনও যাত্রী দুই হাত, দুই পা বা একটি হাত ও একটি পা হারান, সেক্ষেত্রেও তাঁকে ₹ ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
আংশিক আঘাতে কত টাকা?
হাড় ভাঙার মত গুরুতর কিন্তু প্রাণঘাতী নয় এমন আঘাতের ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। যেমন—
-
নিতম্ব বা পায়ের হাড় (Femur/Tibia) ভেঙে গেলে পাওয়া যাবে ₹ ১.৬ লক্ষ টাকা
-
মেরুদণ্ড ভাঙলে, পক্ষাঘাত না হলেও—₹ ২.৪ লক্ষ টাকা
-
পক্ষাঘাত হলে—ক্ষতিপূরণ বেড়ে হবে ₹ ৪ লক্ষ টাকা
এই নতুন ক্ষতিপূরণ পরিমাণগুলির লক্ষ্য হল যাত্রীদের এবং তাঁদের পরিবারের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
কমিশনারের সিদ্ধান্তে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ
যেসব আঘাত উপরের তালিকায় স্পষ্টভাবে নেই, অথচ কর্মক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা থাকে, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কমিশনারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সর্বোচ্চ ₹ ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ অনুমোদন করা হবে।
সারা দেশের ১৭টি শহরে কার্যকর
এই সংশোধিত নিয়ম শুধুমাত্র কলকাতা বা দিল্লির মতো বড় শহরের জন্য নয়। বর্তমানে দেশের ১৭টি শহরে মেট্রো পরিষেবা রয়েছে, এবং সব ক্ষেত্রেই এই নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে। ফলে, দেশের যেকোনো শহরে মেট্রো দুর্ঘটনায় আক্রান্ত যাত্রী বা তাঁর পরিবার ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন প্রক্রিয়া সহজ ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে
নিয়ম অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কমিশনার তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নিষ্পত্তি করবেন। এতে দুর্ঘটনায় পড়া পরিবারদের জন্য দ্রুত আর্থিক সাহায্য নিশ্চিত করা যাবে।
যাত্রী নিরাপত্তায় সরকারের বার্তা
এই নতুন বিধি প্রমাণ করে, মেট্রো যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং আর্থিক সুরক্ষা নিয়ে সরকার সচেতন। মেট্রোর মতো গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহনে দুর্ঘটনা কখনওই কাম্য নয়, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত হলে ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীরা যাতে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি না হন, সেই কারণেই এই পরিবর্তন।