ভারতের বন্দর শিল্পে এক ঐতিহাসিক সাফল্যের নজির গড়ল মহারাষ্ট্রের উরানে অবস্থিত জওহরলাল নেহরু পোর্ট অথরিটি (JNPA)। এই প্রথম কোনও ভারতীয় বন্দর ১০ মিলিয়নেরও বেশি TEU (Twenty-foot Equivalent Unit) হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি ছুঁয়ে ফেলল। সম্প্রতি শেষ হওয়া সম্প্রসারণ প্রকল্পের পর এই ক্ষমতা অর্জিত হয়েছে।
দেশের অর্ধেক কন্টেনার ট্র্যাফিক এখানেই
JNPA বর্তমানে দেশের মোট কন্টেনার চলাচলের অর্ধেকেরও বেশি সামলায়। এখন পোর্টের মোট ৫টি কন্টেনার টার্মিনাল আছে, যার সম্মিলিত ক্ষমতা ১০.৪ মিলিয়ন TEU। পাশাপাশি রয়েছে ২টি লিকুইড ও ২টি জেনারেল কার্গো টার্মিনাল। ২০২৪ সালে পোর্টটি ৭.০৫ মিলিয়ন TEU পরিচালনা করেছিল। চলতি অর্থবর্ষে মে মাস পর্যন্ত হ্যান্ডল করা হয়েছে ১৫.৩৯ মিলিয়ন টন কন্টেনার ও মোট ১৬.৬৪ মিলিয়ন টন কার্গো।
প্রতিদ্বন্দ্বী মুণ্ড্রা পোর্ট কোথায়?
অদানি গোষ্ঠীর মুণ্ড্রা পোর্টের রয়েছে ৪টি কন্টেনার টার্মিনাল, যার সম্মিলিত ক্ষমতা ৭.৫ মিলিয়ন TEU। তাদেরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বর্তমানে এই দুই পোর্ট মিলেই দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ কন্টেনার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
নতুন বন্দর গড়ার পরিকল্পনা
JNPA চেয়ারম্যান উনমেশ শরদ ওয়াঘ জানালেন, “JNPA আরও সম্প্রসারণ করতে পারবে না কারণ এটা একটি সিটি পোর্ট, এবং সী-ফ্রন্ট সীমিত। সেই কারণে আমরা ১৫০ কিলোমিটার দূরে নয়া বন্দর — বধভন পোর্ট তৈরি করছি।” নতুন বন্দরে উন্নত রিসোর্স অপ্টিমাইজেশন ও খরচ হ্রাসে জোর দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
SEZ ও গ্রিন এনার্জিতে জোর
JNPA-র বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (SEZ)-এর ২৬৬ হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ৫০০ একর বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই তার ৭৫% অংশ বিক্রিও হয়ে গিয়েছে। এখানে DP World, JSW ও Fine Organics-এর মতো সংস্থা কাজ শুরু করেছে। বন্দরটি বর্তমানে ৬০% নবীকরণযোগ্য শক্তিতে চলে, ভবিষ্যতে তা ১০০% হবে বলে জানানো হয়েছে। ডিজেল ট্রাকের পরিবর্তে ইলেকট্রিক ট্রাক, ডিজিটাল অপারেশনস ও ট্রাক অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিস্টেমে ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পোর্টের কার্যকারিতা আরও বাড়ানো হচ্ছে। পোর্ট অপারেশনে পুরোপুরি ডিজিটাল প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। ৫G-সক্ষম অবকাঠামো, সাইবার সিকিউরিটি এবং অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থায়ও বড় বিনিয়োগ চলছে।