২৮ জুন বিহারের ছ’টি পুরসভায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এক ঐতিহাসিক ভোট। কারণ এই নির্বাচনেই প্রথমবারের মতো চালু হল ই-ভোটিং পদ্ধতি। ফোনে মোবাইল অ্যাপ খুলে এবার ভোট দেওয়া যাবে নিজের ঘরে বসেই। এই প্রকল্পকে ভারতের গণতন্ত্রে এক বিপ্লব হিসেবেই দেখছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।
কারা পাবেন এই সুবিধা?
এই ই-ভোটিং পাইলট প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল যাঁরা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন না, তাঁদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। এর আওতায় পড়বেন প্রবীণ নাগরিক, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা, অভিবাসী শ্রমিক এবং দীর্ঘদিন অসুস্থ ব্যক্তিরা। কমিশনার দীপক প্রসাদ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ১০ হাজার ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেছেন এবং প্রায় ৫০ হাজার ভোটার এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। ভোটিং যাতে সুরক্ষিত হয়, সেজন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ব্লকচেইন প্রযুক্তি। প্রতিটি ভোট সুরক্ষিত এবং অপরিবর্তনীয়ভাবে সংরক্ষিত হবে। ভোট দেওয়ার জন্য ফেস অথেনটিকেশন, ডিজিটাল স্ক্যানিং, এবং OCR-এর মাধ্যমে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এক মোবাইল নম্বর, সর্বাধিক ২ ভোটার
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, একটি মোবাইল নম্বর থেকে সর্বাধিক দু’জন ভোটার লগ ইন করতে পারবেন। প্রতিটি ভোটারকে অবশ্যই নিজের ভোটার আইডি যাচাই করাতে হবে। এমনকি সিস্টেমে রয়েছে VVPAT-এর মতো ডিজিটাল অডিট ট্রেইল প্রযুক্তিও। বিহার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থায় এক বড় পরিবর্তনের সূচনা করল। ভবিষ্যতে যদি এটি সফল হয়, তাহলে সারা দেশের ভোটব্যবস্থায় মোবাইল ভোটিং চালু হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পর্যবেক্ষকরা।
চ্যালেঞ্জের মুখেও আশাবাদী প্রশাসন
যদিও এই প্রযুক্তি এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে, তবু প্রশাসনের দাবি, ডিজিটাল সিকিউরিটির সমস্ত স্তরেই নজর রাখা হচ্ছে। ভুয়ো ভোট রোধে প্রযুক্তি ব্যবহার যেমন বাধ্যতামূলক, তেমনই পরিকাঠামোগত সমস্যাও সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি শুধু ডিজিটাল উদ্যোগ নয়, বরং এটি গণতন্ত্রকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার প্রয়াস। প্রবীণ, প্রতিবন্ধী বা পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটাধিকার রক্ষা করাই এই ই-ভোটিংয়ের মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন দীপক প্রসাদ।