Air India Bomb Threat : আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার রেশ না কাটতেই আরও এক আতঙ্কজনক ঘটনার খবর এল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি আন্তর্জাতিক বিমান, যা থাইল্যান্ডের ফুকেট থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লি আসছিল, সেটিতে বোমা থাকার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে মাঝপথেই জরুরি অবতরণ করানো হয়। শুক্রবার সকালে এই ঘটনাটি ঘটে এবং তৎক্ষণাৎ ফুকেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তার জোরদার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ঘটনার শুরু : আচমকাই এল হুমকি বার্তা
থাইল্যান্ড বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ রয়টার্স-কে জানিয়েছে, ফ্লাইটটি উড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি সন্দেহজনক বোমা হুমকির বার্তা আসে। সঙ্গে সঙ্গে পাইলট সিদ্ধান্ত নেন, বিমানটিকে ফের ফুকেটে ফিরিয়ে আনতে হবে। যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই নেওয়া হয় এই সিদ্ধান্ত। এই ফ্লাইটে কতজন যাত্রী ছিলেন, তা সরকারি সূত্র থেকে এখনো নিশ্চিতভাবে জানানো হয়নি। তবে কোনও প্রাণহানির খবর নেই বলে প্রথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিমান অবতরণের পরের নিরাপত্তা পদক্ষেপ
জরুরি অবতরণের পর বিমানটিকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাত্রীদের বাইরে বের করে আনা হয়। এরপরই বিমানটিকে ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বাহিনী ও বম্ব স্কোয়াড। তল্লাশি শুরু হয় সম্পূর্ণ বিমানে—যাত্রীদের ব্যাগ, ককপিট, ল্যাগেজ কম্পার্টমেন্ট সবই খতিয়ে দেখা হয়। প্রায় কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি, এবং শেষ পর্যন্ত কোনও বিস্ফোরক মেলেনি বলে জানানো হয়। তবে হুমকি বার্তা কোথা থেকে এসেছে এবং কে পাঠিয়েছে, তা খুঁজে বের করতেই এখন কাজ শুরু করেছে থাইল্যান্ড ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে।
যাত্রীদের অভিজ্ঞতা : আতঙ্কে কেঁপে উঠেছিল হৃদয়
বিমানে থাকা এক যাত্রী জানিয়েছেন, “উড়ানের মাঝপথেই কেবিন ক্রুরা অত্যন্ত শীতল মাথায় পরিস্থিতি সামাল দিলেও, মনে হচ্ছিল প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারব তো?” আতঙ্কের মুহূর্তে যাত্রীদের অনেকেই প্রার্থনা শুরু করেন, কেউ কেউ মোবাইল ফোনে প্রিয়জনকে শেষবারের মতো মেসেজও পাঠান।
সম্প্রতি ভারতীয় বিমানে একের পর এক বিপর্যয়
এই ঘটনাটি এমন এক সময় ঘটল, যখন ভারতীয় এভিয়েশন সেক্টরে পরপর বেশ কয়েকটি বড় দুর্ঘটনা ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যা সামনে এসেছে। আহমেদাবাদে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বোমাতঙ্কের এই ঘটনা আবারও বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
তদন্তে কেন্দ্রীয় এভিয়েশন সংস্থা এবং RAW
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW ও DGCA এই ঘটনার উপর নজর রাখছে। বিদেশে ভারতীয় বিমানে এ ধরনের হুমকি বার্তা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই হুমকির উৎস খুঁজে পেতে ও ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রুখতে কড়া নিরাপত্তা প্রোটোকল গ্রহণের পথে হাঁটছে ভারত।
যদিও শেষপর্যন্ত কোনও বিস্ফোরক মেলেনি, তবুও এ ধরনের হুমকি বার্তা যে শুধু যাত্রীদের মনে আতঙ্ক ছড়ায় তাই নয়, এটি একটি দেশের আকাশপথ নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। ফুকেট থেকে দিল্লিগামী এই ফ্লাইটে বোমা হুমকি ভারতের এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও একবার জাগিয়ে দিল—প্রতিটি যাত্রা যেন হয় শুধু গন্তব্যের দিকে নয়, নিরাপদ ভবিষ্যতের দিকে।
Reuters reports that, “an Air India flight from Thailand’s Phuket to India’s capital New Delhi received a bomb threat on Friday and made an emergency landing on the island, airport authorities said.” pic.twitter.com/iMwR2DOTci
— ANI (@ANI) June 13, 2025