সিকিমের পাহাড়ে লাগাতার বৃষ্টিপাতের জেরে ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে তিস্তা নদী। উত্তর সিকিমের চুংথাং এলাকা ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, জলরাশির চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে তিস্তা ব্যারাজ। জলের তোড় এতটাই তীব্র যে, মাঝে মাঝেই বাঁধ আলগা হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে একাধিক দফায় ছাড়া হয়েছে বিপুল পরিমাণ জল।
হলুদ সতর্কতা জারি, সীমান্তে আশঙ্কার মেঘ
শনিবার দুপুরে সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, তিস্তার দোমহনী থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত অসংরক্ষিত নদীতীরবর্তী অঞ্চলগুলিতে জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert)। এর মানে, জলস্তর বিপজ্জনক ভাবে বাড়ছে, এবং পরিস্থিতি যে কোনও সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। সীমান্তের কাছাকাছি থাকা গ্রামগুলি কার্যত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে, এক ঝটকায় ডুবে যেতে পারে একাধিক বাংলাদেশ-সংলগ্ন গ্রাম।
আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামীকাল রবিবার থেকে শুরু হবে উত্তরবঙ্গের নতুন বৃষ্টিপর্ব। পাঁচ জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে প্রভাব পড়বে সিকিম ও ভুটানের ওপরেও। এর অর্থ, তিস্তার জলস্তর আরও বাড়বে, আর বিপদের আশঙ্কাও ততই তীব্র হবে।
প্রশাসনের প্রস্তুতি ও মানুষের আশঙ্কা
এই অবস্থায় নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে। স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে চুংথাং বিপর্যয়—কয়েক মাস আগেই যেখানকার তিস্তা প্লাবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। মানুষজন এখন আরও ভয় পেয়ে আছে—তিস্তার রোষে আবার যেন না ভাসে ঘরবাড়ি, জীবিকা, পরিবার।
উল্লেখ্য, তিস্তা ও এর শাখানদী ঘেঁষা এলাকাগুলিতে বসবাসকারী মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ অনুসরণ করাই এখন একমাত্র উপায়। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বড়সড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকছেই। তিস্তার বাঁধন যদি পুরোপুরি ভেঙে যায়—তবে শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, বাংলাদেশেও তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এখন প্রশ্ন একটাই—এই জলরাশিকে আটকানো যাবে তো?