২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে নতুন বেতন কাঠামো চালুর সম্ভাবনা। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজ করা প্রায় ৫০ লক্ষ কর্মী এবং ৬৫–৬৮ লক্ষ পেনশনারের জন্য এটি হতে পারে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন। আট নম্বর কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের সুপারিশে বাড়তে পারে মূল বেতন, পেনশন এবং একাধিক ভাতা।
কী কী বদল আসতে চলেছে?
বর্তমানে সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা মূল বেতন পাচ্ছেন ১৮,০০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরে। আট নম্বর কমিশন চালু হলে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫ থেকে ২.৮৬-এর মধ্যে নির্ধারিত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এর জেরে কর্মীদের সর্বনিম্ন মূল বেতন বেড়ে দাঁড়াতে পারে প্রায় ₹৫১,৪৮০। অন্যদিকে পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রেও দেখা যেতে পারে বড়সড় পরিবর্তন। বর্তমানে ন্যূনতম পেনশন ₹৯,০০০ হলেও তা বেড়ে ₹২২,৫০০ থেকে ₹২৫,২০০ পর্যন্ত হতে পারে বলে অনুমান।
ডিএ ও অন্যান্য ভাতা
বর্তমানে কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা যে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা পান, তা ৫৫% থেকে ৭০% এর মধ্যে। নতুন কমিশনের সুপারিশে ডিএ-কে মূল বেতনের সঙ্গে যুক্ত করা হতে পারে। এর ফলে গ্রস পেমেন্টে বাড়তি অঙ্ক যোগ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। পাশাপাশি, বাড়ি ভাড়া ভাতা (HRA), যাতায়াত ভাতা (Travel Allowance), পেনশন স্কিমের (NPS) অবদান এবং CGHS-এর আওতায় চিকিৎসা সুবিধাও সংশোধিত হবে।
বিভিন্ন স্তরের বেতন কাঠামো কী হতে পারে?
কমিশনের সম্ভাব্য হিসাব অনুযায়ী—
-
Level 3: মূল বেতন ₹৫৭,৪৫৬; নেট ₹৬৮,৮৪৯
-
Level 6: মূল বেতন ₹৯৩,৭০৮; নেট ₹১,০৯,৯৭৭
-
Level 9: মূল বেতন ₹১,৪০,২২০; নেট ₹১,৬৬,৪০১
-
Level 11: মূল বেতন ₹১,৮৪,৪৫২; নেট ₹২,১৬,৮২৫
এই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হলে একদিকে যেমন কর্মীদের আর্থিক লাভ হবে, তেমনই সরকারের উপর পড়বে অতিরিক্ত আর্থিক চাপ।
দেরির আশঙ্কা, উদ্বেগে কর্মচারীরা
যদিও ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই কমিশন কার্যকর হওয়ার কথা, তবুও সরকারি স্তরে এখনও কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ‘টার্মস অফ রেফারেন্স’ (ToR) ঠিক না হওয়ায় পরিকল্পনার বাস্তবায়ন পিছিয়ে যেতে পারে বলেই মত অর্থনীতিবিদদের একাংশের। এতে করে ২০২৬ সালের শেষভাগ বা ২০২৭ সালের শুরুতেই এই কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হতে পারে বলে অনুমান। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মচারী সংগঠনগুলির তরফে চাপ বাড়ছে। দ্রুত কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়েছে সরকারের কাছে।
৮ নম্বর বেতন কমিশন শুধু কেন্দ্রীয় কর্মীদের জন্য নয়, দেশের সামগ্রিক আর্থিক পরিস্থিতির উপরও ফেলতে চলেছে বড় প্রভাব। একদিকে কর্মচারীদের জন্য বাড়তি আর্থিক সুবিধা, অন্যদিকে সরকারের বাজেটে বাড়তি চাপ—উভয় দিকই সমান গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার, ঠিক সময়ে কমিশন গঠিত হয় কিনা এবং ২০২৬-এর নির্ধারিত সময়সীমা আদৌ মানা যায় কিনা।