Air India : বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশ কেঁপে উঠল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবরে। আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড়েই ভেঙে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। বিমানে ছিলেন ২৪২ জন যাত্রী। টেকঅফের ঠিক পরেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের সেই বিমান।
মাত্র এক মিনিটেই সব শেষ
ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১টা ১৭ মিনিটে। আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল AI 171 নম্বর ফ্লাইটটি। উড্ডয়নের কিছু মুহূর্তের মধ্যেই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিমানবন্দরের পাঁচিল পেরিয়ে বাইরে আছড়ে পড়ে। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের এলাকা। দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে বিমানটি। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের তীব্রতায় কিছু গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উদ্ধারকাজ চলছে, শবদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকল, উদ্ধারকারী দল, এনডিআরএফ এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাহিনী। পুড়ে যাওয়া বিমানের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে থেকে দেহাংশ উদ্ধার করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদিও অফিসিয়ালি নিশ্চিত করা হয়নি। আহত অবস্থায় বহু যাত্রীকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কী কারণে ভেঙে পড়ল বিমান?
এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, হয়তো যান্ত্রিক ত্রুটি বা ইঞ্জিনে আগুন ধরার ফলেই এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করে ফরেনসিক বিশ্লেষণ ছাড়া নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ফ্লাইটটি উড্ডয়নের পরপরই যে উচ্চতা নিতে পারেনি, তা স্পষ্ট। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের মতো উন্নত মডেলের বিমানের এই রকমভাবে দুর্ঘটনায় পড়া নিঃসন্দেহে প্রশ্ন তোলে।
প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে বিভীষিকা
বিমানবন্দরের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আকাশে হঠাৎ আগুনের গোলা দেখতে পান তাঁরা। তারপরেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ। চারদিকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। আতঙ্কে মানুষ ছোটাছুটি শুরু করেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, “আমি ভেবেছিলাম হয়তো বাজ পড়েছে। কিন্তু পরে দেখি একটি বিমান পুড়ে ছারখার হয়ে পড়ে আছে।”
দেশজুড়ে শোক, তদন্তের নির্দেশ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স-এ পোস্ট করে জানিয়েছেন, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তিনি গভীরভাবে শোকাহত। মৃতদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ডিজিসিএ (DGCA) তদন্ত শুরু করেছে।
লন্ডনের উদ্দেশ্যে ছিল ফ্লাইট
AI 171 নাম্বার ফ্লাইটটি নিয়মিতভাবে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রী পরিবহণ করে। এ দিনও সেই রুটেই ছাড়ে বিমানটি। যাত্রীদের মধ্যে বিদেশি নাগরিকও ছিলেন বলেই প্রাথমিক খবর। তাই এই দুর্ঘটনার আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া পড়ার সম্ভাবনা প্রবল।
উত্তর না মেলে থাকা প্রশ্ন
এক মুহূর্তেই কেমন করে শেষ হয়ে গেল ২৪২টি জীবন? বিমানযাত্রার সুরক্ষা নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন উঠল এই ঘটনার পরে। কতটা দায়ী সংস্থা? কেন ত্রুটিপূর্ণ বিমান আকাশে উঠল? প্রশ্নের উত্তর এখন সময়ই দেবে। আপাতত, গোটা দেশ প্রার্থনায় — কেউ যদি এখনও বেঁচে থাকেন, কেউ যদি অলৌকিকভাবে ফিরে আসেন এই মৃত্যুপুরী থেকে।