Amit Shah : মধ্যপ্রদেশের পাঁচমারিতে চলছিল তিনদিন ব্যাপী বিজেপির সাংসদ ও বিধায়কদের জন্য বিশেষ কর্মশালা। সেখানেই একেবারে স্পষ্ট এবং দৃঢ় বার্তায় অমিত শাহ বলে দেন—“ভুল একবার হতে পারে, কিন্তু বারবার নয়।” দলের নেতাদের মুখ সামলানোর অনুরোধ নয়, আদেশের সুরে বলেই উঠে আসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য।
‘মুখে লাগাম না দিলে দলের ক্ষতি হবেই’—শাহর কড়া বার্তা
সাংসদ-বিধায়কদের উদ্দেশে শাহ বলেন, “বেফাঁস মন্তব্য শুধু ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি নয়, দলেরও মারাত্মক ক্ষতি করে। এই ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত না থাকলে জনগণের বিশ্বাস হারাতে বেশি সময় লাগবে না।” শৃঙ্খলা রক্ষা ও রাজনৈতিক পরিপক্বতার ওপরও জোর দেন তিনি। বলেন, “রাজনীতি শুধু বক্তব্য দেওয়ার জায়গা নয়, মানুষের আবেগ ও সম্মান রক্ষার দায়ও আছে আমাদের কাঁধে।”
কোন মন্তব্যে চরম ক্ষুব্ধ অমিত শাহ?
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ অপারেশন সিঁদুরের অন্যতম মুখ কর্নেল সোফিয়া কুরেশি-কে নিয়ে এক বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যেখানে নারীদের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে অবজ্ঞাসূচক কথা বলেন তিনি। সেই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয় দেশজোড়া সমালোচনা। এরপর রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ দেবরা বলেন, “সেনারা প্রধানমন্ত্রী মোদীর সামনে মাথা নত করেছেন।” এই মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক মহলে নয়, সেনা মহলেও প্রবল সমালোচনার জন্ম দেয়। এই দুই ঘটনায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে। শাহ বুঝিয়ে দেন, নেতাদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দলের ভাবমূর্তিতে বড় আঘাত হানতে পারে।
‘আরেকটা ভুল নয়, এবার থেকেই সাবধান’—সাফ বার্তা শাহর
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা একবার ভুল করেছি, কিন্তু সেই ভুল দ্বিতীয়বার যেন না হয়। এর ফলাফল শুধু ভোটবাক্সে নয়, জনমানসে প্রতিফলিত হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা দেশ গড়ার দায়িত্ব নিয়েছি, মুখে লাগাম না থাকলে সেই স্বপ্নও ধ্বংস হবে।” বিজেপির আদর্শকে সামনে রেখে শৃঙ্খলা বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
BJP-এর অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে এই বার্তা কতটা তাৎপর্যপূর্ণ?
লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এরই মাঝে দলীয় নেতাদের অযথা মন্তব্য বহুবার বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। অমিত শাহর এই কড়া বার্তা যেন একপ্রকার ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ উদ্যোগ। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, নির্বাচনের মুখে দলীয় একতা, শৃঙ্খলা এবং জনবোধে সংবেদনশীলতা না থাকলে ফলাফল ভালো হবে না।
ভাষণ নয়, বার্তা এবার বাস্তবায়নের সময়
অমিত শাহর এই মন্তব্য কেবলমাত্র এক রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নয়, বরং BJP-র ভবিষ্যৎ রণনীতি গঠনের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। নেতাদের মুখ সামলানো ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য থেকে বিরত রাখাই এখন দলের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। ভুল হতেই পারে—এটা মানবিক। কিন্তু ‘এক ভুল দ্বিতীয়বার না হয়’, সেটাই এবার বিজেপির মূল মন্ত্র।