iPhone Manufacturing India : চীনের উপর নির্ভরতা কমিয়ে এবার ভারতে আরও বড় আকারে উৎপাদন বাড়াতে চলেছে প্রযুক্তি জগতে পরিচিত নাম ফক্সকন। বহু প্রতীক্ষিত এই পদক্ষেপ শুধু শিল্পক্ষেত্রে নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতিতেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাইওয়ান-ভিত্তিক এই বহুজাতিক সংস্থা প্রায় ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে ভারত ও আমেরিকায়। এর মধ্যে ভারতের জন্য বরাদ্দ হয়েছে অন্তত ১.৪৯ বিলিয়ন ডলার, যা মূলত দেশের প্রযুক্তি উৎপাদন পরিকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করতে ব্যবহৃত হবে।
চেন্নাইয়ের কাছে নতুন কারখানা, তৈরি হবে আইফোনের যন্ত্রাংশ
এই বিনিয়োগের একটি বড় অংশ ব্যয় করা হবে তামিলনাড়ুর ওরাগাদাম অঞ্চলে একটি নতুন ফ্যাক্টরি তৈরিতে। এখানে তৈরি হবে iPhone-এর মেটাল এনক্লোজার, যা এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট ইউনিটেই প্রস্তুত হতো। নতুন ইউনিটের মাধ্যমে ফক্সকনের লক্ষ্য, Apple-এর চাহিদা অনুযায়ী ভারতের মাটি থেকেই উৎপাদন বাড়ানো এবং সরবরাহের গতি বাড়ানো।
রপ্তানিতে বড় সাফল্য, মার্কিন বাজারে দখল ভারতের
বর্তমানে ভারত থেকে ফক্সকন যে পরিমাণ আইফোন রপ্তানি করছে, তার ৯৭ শতাংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যাচ্ছে। শুধুমাত্র মার্চ থেকে মে ২০২৫—এই তিন মাসে ভারতের তৈরি আইফোন রপ্তানির মূল্য ছুঁয়েছে ৩.২ বিলিয়ন ডলার। এর ফলে ভারত ধীরে ধীরে Apple-এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন ও রপ্তানি কেন্দ্র হয়ে উঠছে। ফক্সকনের এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে Apple-এর চীন নির্ভরতা কমানোর দীর্ঘমেয়াদি কৌশল। বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েন, বাণিজ্য বাধা এবং উৎপাদন খরচ—সব মিলিয়ে বহু সংস্থা এখন চীনের বাইরে নতুন ‘হাব’ খুঁজছে। ভারতের মতো উদীয়মান অর্থনীতি, তুলনামূলক কম খরচ এবং দক্ষ কর্মশক্তি এই ক্ষেত্রে বড় হাতিয়ার হয়ে উঠছে।
তাইওয়ান সরকারের অনুমোদন
ফক্সকনের এই বিনিয়োগ ইতিমধ্যেই তাইওয়ানের অর্থনৈতিক পর্যালোচনা বিভাগ থেকে অনুমোদন পেয়েছে। এই প্রকল্প শুধু ব্যবসার প্রসার নয়, দুই দেশের মধ্যে শিল্প ও কৌশলগত সম্পর্ককেও এক নতুন মাত্রা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, Foxconn-এর এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আরও অনেক বহুজাতিক সংস্থাকে ভারতের দিকে টানবে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘Make in India’ ও ‘Digital India’-র মতো প্রকল্পও এর ফলে বাড়তি গতি পাবে। শুধু আইফোন নয়, আগামী দিনে আরও উচ্চ প্রযুক্তি পণ্যের উৎপাদনে ভারতের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।