একটা নয়, এবার দেশের আরও এক জাতীয় স্তরের ব্যাঙ্কের মালিকানা বদল হতে চলেছে। আইডিবিআই ব্যাঙ্কের স্ট্র্যাটেজিক ডিসইনভেস্টমেন্ট বা কৌশলগত অংশীদারিত্ব বিক্রির চূড়ান্ত পর্বে ঢুকে পড়েছে কেন্দ্র। বিক্রির আগে শুরু হয়ে গেছে দরপত্রের প্রস্তুতি। সরকারি সূত্রেই মিলেছে সেই ইঙ্গিত।
কে কিনবে IDBI ব্যাঙ্ক?
সূত্র বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির এমিরেটস এনবিডি ব্যাঙ্ক (Emirates NBD Bank) সবচেয়ে এগিয়ে এই দৌড়ে। সংস্থাটি আগ্রহ প্রকাশ করলেও এখনও চূড়ান্ত কোনও শেয়ার পারচেস এগ্রিমেন্ট হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে হতে পারে এই বিক্রি।
কে এখন মালিক, আর কারা বিক্রি করছে?
এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকার এবং LIC মিলিয়ে IDBI ব্যাঙ্কের ৯৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। তার মধ্য থেকে ৬০.৭২ শতাংশ শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। অর্থাৎ সরকার ও LIC মিলিয়ে নিজেদের বড় অংশই তুলে দিতে চলেছে কোনও বেসরকারি বিনিয়োগকারীর হাতে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এই পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল। এখন ইন্টার-মিনিস্টেরিয়াল গ্রুপ থেকে ছাড়পত্রও মিলে গিয়েছে।
শেয়ার পারচেস এগ্রিমেন্ট কী?
এটি এমন একটি চুক্তিপত্র, যেখানে ব্যাঙ্কের শেয়ার কাকে, কী দামে, কী শর্তে বিক্রি করা হবে তা নির্দিষ্ট করে লেখা থাকে। এই কাগজে স্বাক্ষর হলেই সরকার দরপত্র প্রকাশ করবে এবং দর হাকাতে পারবে আগ্রহী বিনিয়োগকারীরা।
গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের কী হবে?
প্রশ্নটা এখানেই—লক্ষ লক্ষ গ্রাহক, যাঁদের সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে এফডি বা লোন, সবই এই ব্যাঙ্কে। তাঁদের ভবিষ্যৎ কী? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্কের মালিকানা বদল মানেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে না। অর্থাৎ গ্রাহকদের টাকা, লেনদেন, পরিষেবা সবই চলবে।
তবে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে!
নতুন মালিকরা এসে নীতিতে বদল আনলে সুদের হার বাড়তে বা কমতে পারে, পরিষেবা ফি বদলাতে পারে, এমনকী কিছু শাখা বন্ধও হয়ে যেতে পারে। তাই প্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবা ও গ্রাহক অভিজ্ঞতা কতটা রক্ষা পায়, তা দেখার বিষয়। বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ মনে করছেন, সরকার যদি একটি আন্তর্জাতিক পরিকাঠামো সম্পন্ন সংস্থার হাতে IDBI-কে তুলে দেয়, তবে সেটি ব্যাঙ্কের জন্য লাভের হতে পারে। আবার অন্য অংশ বলছে, সরকারি নিয়ন্ত্রণ হারালে সচ্ছতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা কমে যেতে পারে। এই প্রশ্নও উঠছে। তবে সূত্রের দাবি, কোনও রকম গণছাঁটাই এই মুহূর্তে সম্ভাবনা নেই। ব্যাঙ্কের পুরনো কর্মীরা আগের মতোই কাজ করবেন।