২২ এপ্রিল, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহত হন বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষ। অভিযোগ উঠেছিল, ওই হামলায় ধর্মবিশেষ চিহ্নিত করে টার্গেট করা হয়েছিল হিন্দু মহিলাদের। সিঁদুর মুছে ফেলা হয়েছিল তাঁদের কপাল থেকে। সেদিনের সেই হামলা যেন কাঁপিয়ে দিয়েছিল পুরো দেশকে।
১৪০ কোটি মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। দেশের মানুষ প্রতিশোধ চেয়েছিল। চেয়েছিল এমন জবাব, যা পাকিস্তান চিরদিন মনে রাখবে। সেই প্রতিশোধের কাহিনিই এ বার সামনে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
“তিন বাহিনী মিলে এমন চক্রব্যূহ গড়েছিল, পাকিস্তান পালানোর রাস্তা খুঁজে পায়নি”
বৃহস্পতিবার রাজস্থানের একটি জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকার তিন বাহিনী—থলসেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনাকে সম্পূর্ণ খোলাছুট দিয়েছিল। তারাই মিলে এমন এক চক্রব্যূহ তৈরি করেছিল, যার মধ্যে একবার ঢুকে পড়লে পাকিস্তানের পক্ষে বাঁচার আর কোনও উপায় ছিল না। ২২ মিনিটেই আমরা গুঁড়িয়ে দিয়েছি জঙ্গিদের ৯টি বড় ঘাঁটি।”
এই অপারেশন ছিল সম্পূর্ণ গোপন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, কূটনৈতিক ভারসাম্য এবং সেনাবাহিনীর কৌশলের কথা মাথায় রেখেই দীর্ঘ পরিকল্পনার পর এই আঘাত হানা হয়। মোদীর ভাষায়, “বিশ্ব দেখেছে, কীভাবে ভারত বদলা নেয়। এই বদলার নামই ‘অপারেশন সিঁদুর’। যারা সিঁদুর মোছার সাহস দেখিয়েছিল, তাদের বারুদের স্বাদ চেখে নিতে হয়েছে।”
“আমি বলেছিলাম, দেশের সম্মান নষ্ট হতে দেব না”
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি কথা দিয়েছিলাম, ভারতের গৌরব কোনও অবস্থাতেই মাটিতে মিশতে দেব না। আজ আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আমরা শুধু জবাব দিইনি, পৃথিবীকে দেখিয়েছি ভারত এখন কেমন প্রতিশোধ নিতে জানে।”
তিনি বলেন, “ভারতীয় সেনা যে সাহস, শৃঙ্খলা আর পরিকল্পনার সঙ্গে এই অভিযান সম্পন্ন করেছে, তা অভূতপূর্ব। এমন অপারেশন কল্পনাও করতে পারেনি পাকিস্তান।”
“প্রতিটি রক্তবিন্দুর হিসাব নিয়েছে ভারত”
প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন, “ভারতের রক্ত বইয়েছে। সেই প্রতিটি বিন্দুর জবাব দিতে হয়েছে শত্রুকে। এটাই আজকের নতুন ভারত। যারা ধর্মের নামে হামলা চালায়, তাদের মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার শক্তি রাখে এই দেশ।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, কিন্তু কেউ যদি আমাদের মা-বোনের সিঁদুরের দিকে তাকায়, তাহলে তার ফল কী হতে পারে, এবার তারা বুঝে গেছে।”
নতুন ভারতের বার্তা: সংবেদন নয়, শক্তির জবাব শক্তি
এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রী মোদী শুধু একটা অভিযান নয়, এক নতুন ভারতীয় মনোভাব তুলে ধরেছেন। যেখানে সংবেদনশীলতা আছে, কিন্তু দুর্বলতা নয়। যেখানে রক্ষা করা হয় সম্মান, এবং তার জন্য প্রয়োজনে শত্রুকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও দেখানো হয়।