দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে ফের এক বড় পদক্ষেপ নিল ভারত। সৌদি আরবের সঙ্গে একগুচ্ছ কৌশলগত ও অর্থনৈতিক চুক্তিতে সায় দিয়েছে মোদী সরকার। এই পদক্ষেপ শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, বরং সমগ্র পশ্চিম এশিয়ায় ভারতের কূটনৈতিক উপস্থিতিকে আরও জোরালো করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই পদক্ষেপকে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলেই ব্যাখ্যা করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা। কারণ, এই চুক্তির জেরে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রধান শক্তি সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের সামরিক, বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে।
পাকিস্তান উদ্বিগ্ন
এই ঘটনার পরই পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা মহলে উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে। ইসলামাবাদ মনে করছে, ভারত যদি সৌদি আরবের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হয়, তাহলে ইসলামি বিশ্বে পাকিস্তানের ঐতিহ্যগত প্রভাব খর্ব হতে পারে। এমনকি পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্বার্থও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
চিনের অস্বস্তি বাড়ছে
শুধু পাকিস্তান নয়, এই কৌশলগত সমীকরণে চিনও অস্বস্তিতে পড়েছে। সৌদি আরব হল ‘চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা BRI-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী। আর সেখানে ভারতের সক্রিয় উপস্থিতি, চিনের প্রভাব খর্ব করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বেজিং।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় এক নতুন কৌশলগত বলয়ের জন্ম দিতে পারে, যেখানে চিনের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে।
দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি নতুন মোড় নিচ্ছে?
যেখানে চিন এবং পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের মধ্যে একটি শক্তিশালী কৌশলগত জোট বজায় রেখেছে, সেখানে ভারতের এই নতুন রণনীতি সেই জোটকে চ্যালেঞ্জ করার মতো বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।
ভারত ও সৌদির এই পারস্পরিক সহযোগিতা শুধু দুই দেশের অর্থনীতির উপকারে আসবে না, বরং এটি গোটা এশিয়ায় ভারতের অবস্থানকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলবে।
উল্লেখ্য, মোদী সরকারের সৌদি-মুখী এই মাস্টারস্ট্রোক এটাই দেখিয়ে দিল যে, ভারত শুধু প্রতিবেশী দেশগুলোতেই নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতির প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চেই নিজের প্রভাব বাড়াতে বদ্ধপরিকর। এখন দেখার, এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চিন ও পাকিস্তান ভবিষ্যতে কী কৌশল নেয়।