Indo-American : যুবকটি ভেবেছিল উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা গেলে জীবনের দিগন্ত বদলাবে। কিন্তু বাস্তবে যা ঘটল, তা এককথায় গা-শিউরে ওঠার মতো। আমেরিকার নিউয়ার্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে (Newark Liberty International Airport) এক ভারতীয় ছাত্রকে হাতকড়া পরিয়ে, অপরাধীর মতো মাটিতে ফেলে অপমান করা হয়। এই ঘটনা সামনে এনেছেন ইন্দো-আমেরিকান সমাজকর্মী কুণাল জৈন। তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে প্রকাশিত ঘটনার বিবরণে উঠে এসেছে সেই ছাত্রের চোখের জল, আত্মসম্মানের ক্ষরণ এবং অভিবাসন নীতির অমানবিক চেহারা। কুণাল জৈনের কথায়, বিমানবন্দরে তিনি দেখেন এক তরুণ ভারতীয় ছাত্রকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সে কাঁদছিল, আতঙ্কে ছিল। কোনও অপরাধ করেনি, তবু তার সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ করা হয়। যুবকটি সম্ভবত শিক্ষার উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিল, কিন্তু ইমিগ্রেশন অফিসারদের কাছে তার সফরের উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে না পারায় তার প্রবেশাধিকার খারিজ করা হয়।
‘প্রতিদিন ৩-৪ জনকে ফেরানো হচ্ছে’
কুণাল আরও জানান, এ ধরনের ঘটনা নিত্যদিন ঘটছে। বহু ভারতীয় ছাত্র বা অভিবাসনপ্রত্যাশী সকালবেলা পৌঁছে সন্ধের ফ্লাইটে হাত-পা বেঁধে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের এই আচরণ এখন নতুন স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। তাঁর পোস্টে তিনি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ট্যাগ করে লিখেছেন, “এই ছাত্রটির আমার সঙ্গে একই বিমানে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তাকে উঠতেই দেওয়া হয়নি। কারও উচিত খোঁজ নেওয়া যে কী ঘটেছে তার সঙ্গে।”
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি ও ভারতীয়দের ভয়
এই ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমল থেকেই অভিবাসী বিতাড়নের কড়া নীতি কার্যকর হয়েছে। ২০২4-এর নির্বাচনী প্রচারে অভিবাসী বিতাড়ন আরও বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প। এর আগেও বেশ কয়েকজন ভারতীয় অভিবাসীকে শিকল পরিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যার ভিডিয়ো সারা বিশ্বের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। তবুও অবস্থার বদল হয়নি। এবার আবার এক ছাত্রের লাঞ্ছনার ছবি নতুন করে সেই ক্ষত উস্কে দিল।
এই ঘটনার পর কী করণীয়?
এই ধরণের ঘটনা শুধু ছাত্র বা অভিবাসীদের জন্য নয়, বরং ভারতীয় রাষ্ট্রের গৌরবের উপরেও আঘাত। সরকারের উচিত বিষয়টি দ্রুত আমেরিকার সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে তুলে ধরা। একইসঙ্গে ভারতীয় দূতাবাসগুলোর উচিত অভিবাসন-বিধি নিয়ে আরও সচেতনতা ছড়ানো। একটি প্রশ্ন এখানেও উঠে যায়—স্বপ্ন দেখার জন্য ভারতীয় তরুণদের কতটা মূল্য দিতে হবে? আর এই অপমানের শেষ কোথায়?
উল্লেখ্য, নিউয়ার্ক বিমানবন্দরর এই ঘটনা শুধু একটি ছাত্রের নয়, বরং হাজার হাজার ভারতীয় ছাত্র ও অভিবাসীর এক যুগপৎ বাস্তবচিত্র। সেই বাস্তব যেখানে স্বপ্নের দেশ হয়ে উঠছে লাঞ্ছনার প্রান্তভূমি। ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে শক্ত অবস্থান নেওয়ার সময় এসেছে। কারণ, এটা শুধু অভিবাসনের প্রশ্ন নয়—এটা মানবিক মর্যাদার প্রশ্ন।
I witnessed a young Indian student being deported from Newark Airport last night— handcuffed, crying, treated like a criminal. He came chasing dreams, not causing harm. As an NRI, I felt helpless and heartbroken. This is a human tragedy. @IndianEmbassyUS #immigrationraids pic.twitter.com/0cINhd0xU1
— Kunal Jain (@SONOFINDIA) June 8, 2025