TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

গোপনে চালাতেন শিশু পর্নের ব্যবসা! ই-রিকশাচালকের মোবাইলে ভয়ঙ্কর তথ্য

ইন্দোরে এক বেসরকারি স্কুলের ই-রিকশাচালক গোপনে হোয়াটসঅ্যাপে শিশুদের পর্ন ভিডিও শেয়ার করতেন। আন্তর্জাতিক সংস্থার নজরে এসে গ্রেফতার। মোবাইল থেকে উদ্ধার হয়েছে ডিলিট হওয়া তথ্যও।

Debapriya Nandi Sarkar

ইন্দোরের একটি বেসরকারি স্কুলে কর্মরত এক ই-রিকশা চালক ছিলেন স্কুলপড়ুয়া শিশুদের আনা-নেওয়ার দায়িত্বে। সেই আস্থার জায়গাটিকে পাথরে গুঁড়িয়ে দিল তাঁরই লুকোনো অপরাধ। গোপনে শিশু পর্নোগ্রাফি ভিডিও শেয়ার করতেন হোয়াটসঅ্যাপে। ঘটনাটি সামনে আসে যখন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করে ভারতীয় সাইবার সেলকে। তারপরই শুরু হয় তদন্ত, আর একে একে ফাঁস হয় ভয়ানক সত্য।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

কীভাবে ফাঁস হল কাণ্ড?

ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেন’ (NCMEC)—এই আন্তর্জাতিক সংস্থা শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা রক্ষার কাজে যুক্ত। তাদের নজরে আসে ভারতের ইন্দোর শহরের এক হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী সন্দেহজনক শিশু পর্ন কনটেন্ট শেয়ার করছেন। সংস্থাটি বিষয়টি জানায় ইন্দোর সাইবার সেলকে। তদন্তে দেখা যায়, অভিযুক্ত ৬০ বছরের ইরশাদ ওই ভিডিও শেয়ার করেছেন অন্তত তিনবার। তদন্তে উঠে আসে, ইরশাদ ২০২২ সালে নিজের মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ ফরম্যাট করে দেন। উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত প্রমাণ মুছে ফেলা। কিন্তু আধুনিক সাইবার ফরেনসিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাইবার সেলের দল সেই মুছে ফেলা ডেটা পুনরুদ্ধার করতে সফল হয়। ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং সেখান থেকে পাওয়া ভিডিওগুলি যাচাই করা হচ্ছে। প্রাথমিক অনুমান, কিছু ভিডিও বিদেশি উৎস থেকেও আসতে পারে। ইরশাদের অনলাইন আচরণ নিয়ে সন্দেহ ছিল হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষেরও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত এই সংস্থা নিজস্ব অ্যালগরিদমের মাধ্যমে নিরীক্ষা চালায় এবং বিপদজনক কনটেন্ট শনাক্ত করে। তারাও ইরশাদের অ্যাকাউন্ট নজরে রাখছিল। সবমিলিয়ে তথ্য প্রমাণ জোগাড় হতে সময় লাগেনি।

কোন কোন ধারায় মামলা?

ইরশাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৭বি ধারা সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৬৭বি ধারা অনুযায়ী, শিশুদের জড়িয়ে থাকা কোনও অশ্লীল ভিডিও বা ছবি ডিজিটালি ছড়ানো গুরুতর অপরাধ। পাশাপাশি, পকসো (POCSO) আইনের আওতায়ও বিচার হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। যে বেসরকারি স্কুলে তিনি কর্মরত ছিলেন, তাদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে। পুলিশ স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে যেন অভিযুক্তের চাকরিজীবনের তথ্য ও আচরণ খতিয়ে দেখা হয় এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এই ঘটনায় স্কুলেও নেমে এসেছে আতঙ্ক।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

‘শিশু পর্ন’ = ‘নৃশংসতা’, বলছে সুপ্রিম কোর্ট

শিশুদের পর্নোগ্রাফিকে এককথায় ‘নৃশংসতা’ বলে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের মতে, এই ধরনের ভিডিও ডাউনলোড বা শেয়ার করা তো বটেই, দেখা পর্যন্ত অপরাধ। এই ধরনের কাজের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে শীর্ষ আদালতের।

একটি নিরীহ পেশার আড়ালে লুকিয়ে ছিল ভয়ঙ্কর অপরাধ। স্কুলের মতো সংবেদনশীল পরিবেশে কর্মরত একজন মানুষের কাছ থেকে এই ধরনের অপরাধ শুধু আইন নয়, সমাজের পক্ষ থেকেও ধিক্কারযোগ্য। এই ঘটনার পর অভিভাবক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—আমরা যাদের হাতে শিশুদের তুলে দিচ্ছি, তাঁরা আদৌ কতটা নিরাপদ?
সাইবার অপরাধের যুগে নজরদারি যেমন দরকার, তেমনি দরকার সজাগ ও সচেতন সমাজের