INS Tamal : ভারতীয় নৌসেনার রণশক্তিতে এক বড় সংযোজন হতে চলেছে আগামী ১ জুলাই। রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদে সেই দিন কমিশন হতে চলেছে ভারতের নতুন স্টেলথ ফ্রিগেট INS Tamal। এই যুদ্ধজাহাজ কেবল আধুনিক প্রযুক্তিতে সুসজ্জিত নয়, বরং এটি ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলের এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হয়ে উঠতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে প্রতিরক্ষা মহলে।
Talwar-এর উন্নত রূপ ‘তামাল’
এই ফ্রিগেটটি মূলত Talwar-ক্লাস যুদ্ধজাহাজের উন্নত সংস্করণ, যা Tushil-ক্লাস নামে পরিচিত। INS Tamal হলো এই সিরিজের দ্বিতীয় জাহাজ এবং রাশিয়ায় নির্মিত ভারতের শেষ যুদ্ধজাহাজ। এর দৈর্ঘ্য ১২৫ মিটার, ওজন প্রায় ৩,৯০০ টন এবং এটি একাধারে দ্রুতগামী ও যুদ্ধ সক্ষম।
আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত
INS Tamal–এ যুক্ত রয়েছে BrahMos সুপারসনিক মিসাইল, যা শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ও নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম। রয়েছে Shtil surface-to-air missile system, যা আকাশপথে প্রতিপক্ষের হামলা প্রতিহত করতে পারদর্শী। জাহাজটিতে রয়েছে আধুনিক HUMSA NG Mk II sonar system, সিসিটিভি ক্যামেরা, এবং উন্নত ইলেকট্রনিক ও সেন্সর সিস্টেম।
প্রযুক্তির সঙ্গে দেশীয় সংযোজন
এটি একটি বহুমাত্রিক (multi-role) রণতরী, যার মোট সিস্টেমের ২৬ শতাংশ দেশীয়ভাবে তৈরি এবং এর মধ্যে ৩৩টি ভারতীয় প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে এটি শুধু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। এই স্টেলথ ফ্রিগেটের সর্বোচ্চ গতি ৩০+ নট, এবং এতে প্রায় ২৫০ জন নাবিক ও অফিসার একযোগে কাজ করতে পারবেন। যুদ্ধজাহাজটি কমিশনের পরে যুক্ত হবে ভারতের পশ্চিম নৌবহরের ‘Sword Arm’ ইউনিটে। উপকূল রক্ষায়, সমুদ্রসীমার নজরদারিতে এবং কৌশলগত মিশনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতিফলন
২০১৬ সালে রাশিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি ২.৫ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় মোট চারটি Tushil-ক্লাস ফ্রিগেট নির্মাণের পরিকল্পনা হয়। তার মধ্যে Tamal হচ্ছে রাশিয়ায় তৈরি শেষ যুদ্ধজাহাজ। বাকি দুটি বর্তমানে গোয়ায় ভারতীয় শিপইয়ার্ডে তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যুদ্ধজাহাজ শুধু আধুনিক অস্ত্রেই নয়, সমন্বিত সেন্সর ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারতের নৌসেনাকে ভবিষ্যতের লড়াইয়ের উপযুক্ত করে তুলবে। বিশেষ করে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে Tamal-এর সংযোজন কৌশলগতভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।