রাজস্থানের জয়পুরে সোমবার রাতে সীতাপুরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। একটি জুয়েলারি কারখানার সেপটিক ট্যাঙ্কে সোনা থাকার সন্দেহে নামানো হয় শ্রমিকদের। কিন্তু ভিতরে থাকা বিষাক্ত গ্যাসের কারণে ট্যাঙ্কে নেমেই একে একে অজ্ঞান হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় চারজনের।
বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বহুদিন ধরে ব্যবহার না হওয়া ওই সেপটিক ট্যাঙ্কে বিষাক্ত গ্যাস জমে ছিল। কোনও রকম নিরাপত্তা ছাড়াই ট্যাঙ্কে নামানো হয় মোট আটজন শ্রমিককে। ভিতরে ঢুকতেই বিষক্রিয়ায় একে একে অচেতন হয়ে পড়েন তাঁরা। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা নিহত শ্রমিকরা
মৃত চারজন শ্রমিকই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। তাঁদের নাম-পরিচয় এখনও সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়নি। বাকিদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, আর দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সোনা খুঁজতে সেপটিক ট্যাঙ্কে নামানো হয়
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, কারখানার কর্তৃপক্ষের ধারণা ছিল—ধোয়া-পরিষ্কারের সময় সোনার ছোট কণা বর্জ্যের সঙ্গে সেপটিক ট্যাঙ্কে জমে থাকতে পারে। সেই কারণেই শ্রমিকদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভিতরে নামানো হয়। কিন্তু কোথাও কোনও গ্যাসের সতর্কতা বা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা ছিল না।
তদন্তে নেমেছে পুলিশ, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে
ঘটনার পরেই এলাকায় ছড়ায় উত্তেজনা। পুলিশ ও দমকল বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কারখানার মালিক ও সুপারভাইজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সুরক্ষা বিধি মানা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। কীভাবে শ্রমিকদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নামানো হলো, তার কোনও নজরদারি ছিল না কেন? মৃত শ্রমিকদের পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। পাশাপাশি গোটা এলাকাতেই ছড়িয়েছে তীব্র ক্ষোভ।