Lava Kalimpong Tourism Gift : পাহাড়ি বাতাসে এবার ভেসে বেড়াচ্ছে জৈব সম্ভারের ঘ্রাণ। কালিম্পংয়ের লাভায় চালু হল এক অভিনব উদ্যোগ—পর্যটকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের হাতে তৈরি ১০০% জৈব উপহার। ‘কোসেলি’ নামে এই ব্র্যান্ড ইতিমধ্যেই পর্যটক এবং স্থানীয়দের মধ্যে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
কী এই ‘কোসেলি’?
নেপালি ভাষায় ‘কোসেলি’ শব্দটির অর্থ ‘উপহার’। আর সত্যিই, লাভা এবং সংলগ্ন অঞ্চলের ৭৩৩টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্গত প্রায় ৬,০৮৭ জন মহিলা মিলে গড়ে তুলেছেন এমন এক সম্ভার, যা একদিকে যেমন উপার্জনের নতুন পথ খুলে দিচ্ছে, তেমনই পর্যটকদের জন্য স্মৃতিস্মরণীয় উপহার হয়ে উঠছে।
এই কোসেলি গিফট বক্সে থাকছে—
-
পাহাড়ি মধু
-
দেশি হলুদ
-
করলার চিপস
-
ছাতু
-
বাজরা
-
গোলমরিচ
-
বাঁশ ও বেতের হস্তশিল্প
সব পণ্যই তৈরি হচ্ছে স্থানীয়ভাবে, বাড়িতে সংগ্রহ করা কাঁচামাল থেকে, যা প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেজ করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে।
উদ্যোগে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা
স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় একটি আধুনিক প্যাকেজিং ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে লাভায়, যেখানে এই সমস্ত সামগ্রী স্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রক্রিয়াজাত ও মোড়কজাত করা হচ্ছে। পণ্যের গুণমান, রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিপণনের জন্য রাখা হয়েছে নজরদারির বিশেষ ব্যবস্থা। এই সমস্ত পণ্য লাভা অঞ্চলের গেটপয়েন্ট, হাটবাজার, পর্যটন কেন্দ্র, সরকারি বিক্রয় কেন্দ্র ও স্থানীয় মেলাগুলিতে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া, অনলাইন মাধ্যমেও এই পণ্য সহজলভ্য করার কাজ চলছে, যাতে দূরদূরান্তে থাকা ক্রেতারাও এই জৈব উপহারে হাত রাখতে পারেন।
নারী স্বনির্ভরতার এক নতুন অধ্যায়
এই উদ্যোগ শুধু পর্যটন নয়, নারী ক্ষমতায়ন ও স্বনির্ভরতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। পাহাড়ি এলাকায় কর্মসংস্থানের সীমিত সুযোগে, এমন একটি সুসংগঠিত ও টেকসই ব্যবসায়িক মডেল অনেক নারীর জীবনে অর্থনৈতিক স্থিতি আনছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের উদ্যোগ অন্যান্য পাহাড়ি অঞ্চলেও অনুকরণীয় হতে পারে। প্রশাসন ও সমাজের মিলিত প্রচেষ্টায় যদি জৈব পণ্য ও হস্তশিল্পকে আরও বিস্তৃত বাজারে পৌঁছে দেওয়া যায়, তাহলে তা স্থানীয় অর্থনীতির পক্ষে বিপুল সহায়ক হবে। এখনই ভাবনা চলছে এই ‘কোসেলি’ ব্র্যান্ডকে আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দেওয়ার। পর্যটকদের কাছে ‘মেড ইন লাভা’ স্ট্যাম্প থাকলে তা শুধু স্মারক নয়, বরং স্থানীয় সংস্কৃতি ও জীবনের একখণ্ড গল্প হয়ে উঠবে।