ফরিদাবাদে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। বন্ধুত্বের আড়ালে লুকিয়ে ছিল নৃশংসতার ছায়া। এক ব্যক্তিকে নির্মম অত্যাচারের পর ফেলে রাখা হয় মৃত্যু-সম্ভব পরিস্থিতিতে। শেষ মুহূর্তে হাসপাতালের বেডে তিনি নিজের পরিবারের কাছে ফাঁস করেন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ফার্মহাউসের অন্দরেই ছিল মৃত্যু ফাঁদ
ঘটনাটি ঘটেছে ১৭ মে, ২০২৫ তারিখে, ফরিদাবাদের সেক্টর ৫৮-এ। বছর পঁইত্রিশের মনোজ চৌহান তাঁর চার বন্ধুর সঙ্গে একটি ফার্মহাউসে গিয়েছিলেন স্নান করতে। উপস্থিত ছিলেন আতিন্দর, কার্তিক, সন্দীপ এবং রাহুল ওরফে কবুতর। স্নান করার সময় আচমকাই ঘটে যায় অমানবিক কাণ্ড।
ক্ষতবিক্ষত মনোজ
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বন্ধুরা মিলেই একটি চলন্ত সাবমার্সিবল পাম্পের জল সরবরাহকারী পাইপ মনোজের গোপনাঙ্গে প্রবেশ করিয়ে দেন। উচ্চচাপে জল প্রবাহিত হওয়ায় তাঁর শরীরে মারাত্মক অভ্যন্তরীণ আঘাত লাগে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।
হাসপাতালের বেডেই ফাঁস করলেন চাঞ্চল্যকর সত্য
সকাল ৯টা নাগাদ ওই চার বন্ধু মনোজকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেন এবং পরিবারের কাছে জানান, তাঁর হঠাৎ অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। তবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, চিকিৎসার সময়ে মনোজ তাঁর দাদা আনন্দ চৌহানকে পুরো ঘটনা জানিয়ে দেন। দাদা আনন্দ চৌহান এরপরই ফরিদাবাদ সেক্টর ৫৮ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার
অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (Bharatiya Nyaya Sanhita) প্রাসঙ্গিক ধারায় একটি এফআইআর রুজু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সন্দীপ ও রাহুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে আতিন্দর এবং কার্তিক এখনও পলাতক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের খোঁজে একাধিক জায়গায় হানা দেওয়া হচ্ছে।
বন্ধুত্বের মুখোশে নৃশংসতা—সমাজে উদ্বেগের বার্তা
এই মর্মান্তিক ঘটনার আগের দিন রাতে, অর্থাৎ ১৬ মে, অভিযুক্তরা একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং পরদিন সকালে ফার্মহাউসে যান। সেখানে আনন্দ-আড্ডা মুহূর্তেই রূপ নেয় নিষ্ঠুর খেলায়। এই ঘটনা শুধু বন্ধুত্বের আস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে না, বরং সামাজিকভাবে এক গভীর সংকেত দিয়েছে—বন্ধুত্বের মুখোশের আড়ালে কখনও কখনও কী ভয়ঙ্কর রূপ লুকিয়ে থাকতে পারে।